দক্ষিণ কলকাতার প্রান্তিক অঞ্চল কামাল গাজি থেকে সামান্য এগিয়ে প্রতাপগড়। বি ডি মেমোরিয়াল ইন্টারন্যাশানাল স্কুলের পাশেই ছোট্ট রেস্তোরাঁ হ্যাং আউট। একই ছাদের নিচে নারী পুরুষের প্রসাধনী অলঙ্কার, পোশাক যেমন আছে, তেমন আছে বাছাই করা বইয়ের লাইব্রেরি। রেস্তোরাঁর অঙ্গসজ্জাতেও আছে বঙ্গ তথা আন্তর্জাতিক মোটিভের ছোঁয়া। এখানেই শেষ নয়। রয়েছে প্ল্যাটফর্ম। রয়েছে গিটার। মাউথ পিস্। প্রাণ খুলে গান গাইতেও পারেন।
মেনু কার্ডে নজর দিলে পাবেন নিরামিষ , আমিষ নানা আন্তর্জাতিক খাদ্য ও পানীয়ের সম্ভার। কলকাতায় এখন পাড়ায় পাড়ায় ফুড স্ট্রিট। সেখানে বছর জুড়ে ফুডি বিপ্লবীরা বিপ্লব করে বেড়াচ্ছেন । খাদ্য গবেষকরা ফুডিদের মন পেতে নিত্যিনতুন ফিউশন খাদ্য আবিষ্কার করছেন। ফলে বাংলা তথ্য কলকাতা এখন দেশের খাদ্য সংস্কৃতির সেরা পীঠস্থান হয়ে উঠেছে।
পরিচয় হলো হ্যাংআউট ব্যুটিক রেস্তোরাঁর কর্ণধার সৈকত মণ্ডলের সঙ্গে। তিনি জানালেন, আমার বরাবরই ছিল ফিউশন ফুডের প্রতি দুর্বলতা।তাছাড়া আজকের প্রজন্ম কবজি ডুবিয়ে নয়, স্বাস্থ্যসচেতন হয়েই খানাপিনা করেন। সেক্ষেত্রে আমাদের রেস্তোরাঁয় কোনও বনস্পতি তেল নয়,অলিভ অয়েল , রাইস ব্র্যান ওয়েল ও বাটার ব্যবহার হয়। ডিপ ফ্রাই নয়, সতে খাবার আমাদের ইউ এস পি। সম্ভবত আমরাই এখানে বর্তমান যুগের কন্টিনেন্টাল ফুডের সঙ্গে সাবেকি দুষ্প্রাপ্য কন্টিনেন্টাল ফুডের আয়োজন করেছি। ঠাকুর বাড়ির কন্টিনেন্টাল ফুডের পদ থাকছে আমাদের এই ব্যুটিক রেস্তোরাঁয়।
বাজার জুড়ে এখন পুজো স্পেশাল চলছে। হ্যাং আউট রেস্তোরাঁয় পুজো স্পেশাল কি প্রশ্নের উত্তরে কর্ণধার সৈকত মণ্ডল জানালেন, আমরাই প্রথম এই বছর কন্টিনেন্টাল মহাভোজ থালির আয়োজন করেছি। থাকছে বাবুয়ানা মহাভোজ ও বিলাসীবাবু মহাভোজের নিরামিষ ও আমিষ থালি। মাত্র সাত আটশো টাকার জন প্রতি এই থালিতে থাকছে ক্রিমি চিকেন মাশরুম স্যুপ, সতে চিকেন স্যালাড, বাবুস প্রণ কাটলেট, স্কচ এগ , মিনী আল এ কিউব,লেমন ফিস রেসোলে, ফিস ফিংগার উইথ টার্টার সস, চিকেন উইংস উইথ মাস্টার্ড সস, গার্লিক রাইস। নিরামিষ তালিকায় থাকছে বাবুসভেজ কাটলেট, কটেজ চিজ স্টেক, পনির স্কোয়ারস, চিজ ক্রকেটস । শেষ পাতে সবার জন্যই আছে ব্রাউনি উইথ আইসক্রিম। এছাড়াও আমাদের এখানে আলাদা করে পছন্দের ডিশ অর্ডার করতে পারেন।
ইতিমধ্যেই সেলিব্রেটিদের অনেকেই এই রেস্তোরাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এমনকি ডায়েটিশিয়ানদের অনেকেই এখানকার মেনু যে একই সঙ্গে সুস্বাদু তো বটেই স্বাস্থ্য সম্মতও বটে বলে মন্তব্য করেছেন। নিয়মিত মেনু কার্ডেও আছে শৈল্পিক স্পর্শ। ১৯ শতাব্দীর রোমান স্টাইল ইংরেজি বর্ণের ব্যবহার । যেন পুরানো দিনের হলদে হয়ে যাওয়া সংবাদপত্রের একটি নমুনা। কর্ণধার সৈকত মণ্ডল জানালেন, তাঁদের আর একটি আউটলেট আছে হাওড়া শহরের ডুমুরজলা স্টেডিয়ামের পাশে। এখনও যাঁরা হ্যাংআউট রেস্তোরাঁয় আসেননি, পুজোয় ঠাকুর দেখার ফাঁকে সাবেকি স্বাদের কন্টিনেন্টাল খাদ্য চেখে না দেখতে না আসেন তাহলে উৎসবের সব পেয়েছির সুখ থেকে বঞ্চিত হবেন।