ইন্দ্রজিৎ আইচ…….কলকাতা প্রেক্ষাপট (বাটা নগর- মহেশতলা) র এক নাম করা নাট্যদল।পশ্চিম বঙ্গ সহ সারা ভারতবর্ষ জুড়ে তারা দীর্ঘদিন ধরে নাট্য চর্চা করে আসছেন। করোনা র কারণে বহুদিন যাবৎ সব হল বন্ধ।যার কারণে থিয়েটার এর সকল কর্মী থেকে সকল অভিনেতা ও অভিনেত্রী দের রোজগার বন্ধ বহু মাস ধরে।বহু নাটকের শিল্পীরা মারা গেছেন আর্থিক কারণে কেউ বা করোনায় আবার কেউ সুইসাইট করেছেন। খুব খারাপ অবস্থা চারদিকে।যার ফলে নানা অভাব, অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঘটে চলেছে প্রতিদিন। এই করুন অবস্থায় কলকাতা প্রেক্ষাপট তাদের ভাবনা চিন্তা থামিয়ে রাখেনি। এই কঠিন অবস্থায় তারা তাদের নিজস্ব মহড়া কক্ষে সম্প্রতি দলের শিল্পীদের নিজেদের চেষ্টায় প্রথম শ্রুতি নাটক ” নীল নীলা” পরিবেশন করলো।তাদের পরিবেশিত ভার্চুয়াল এই অন লাইন শ্রুতি নাটক সকলের মন জয় করে নেয়। শ্রুতি নাটকের পর ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ দুটি সেমিনার। দুটোই থিয়েটার কেন্দ্রিক। প্রথম টির বিষয় ছিল “করোনা কালে এই পরিস্থিতিতে মহেশতলা অঞ্চলে নাট্য চর্চার গতিপথ”।এই আলোচনায় অংশ নেয় মহেশ তলা, বাটা নগর এলাকার নাট্য নির্দেশক কালি শঙ্কর ভট্টাচার্য, রবিন চক্রবর্তীসমীরণ ঘোষ, পল্লব রায়, সংগ্রাম চট্টোপাধ্যায় এবং অভিজিৎ গুপ্ত। এই আলোচনায় সকলের একটাই কথা বার বার উঠে আসে যে কি ভাবে আমরা করোনা মোকাবিলা করে থিয়েটার করবো। এখন নতুন কিছু ভাবতে হবে।এই সেমিনার পরিচালনায় ছিলেন কলকাতা প্রেক্ষাপট এর কর্ণধার ও নির্দেশক অভিজিৎ গাঙ্গুলী। দ্বিতীয় সেমিনারে র বিষয় বস্তু ছিল ” এই করোনা র সময় মহেশতলা অঞ্চলে নৃত্য ও তার ভবিষ্যত”। কারণ আমরা জানি মঞ্চ নাটকে সংগীত ও নৃত্য খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু নাচ গান জানা সেই সব শিল্পী রাও আজ সম্পূর্ণ বেকার। তাদেরও ভবিষ্যৎ অন্ধকার। কি হবে কেউ জানে না, কেউ কিছু বলতে পারছে না। এই নিয়ে আলোচনা করেন নৃত্য পরিচালক পুস্পক মুখার্জী, অরূপ চক্রবর্তী, চঞ্চল সেন, শ্রীনুতা ঘোষ ও সুদেষ্ণা সিকদার। সকলের এই অন লাইন ভার্চুয়াল আলোচনায় কয়েক টি সমস্যা ও কয়েক টি ভালো দিক উঠে আসে।।শিল্প হলো সময়ের প্রতিবিম্ব।সমাজের দর্পন, সংস্কৃতি বা থিয়েটার সমাজের কথাই তুলে ধরে। এই করোনা দিনে দিনে বাড়ছে।থিয়েটার হল খুলে গেলেও দর্শক কতটা আসবে, কত টিকিট বিক্রি হবে, কতটা দুরত্ব বজায় রেখে দর্শক বসবে, কতটা অর্থনৈতিক ভাবে দল ক্ষতির শিকার হবে তাই নিয়ে সব নাট্য দলের মনে বিরাট সংশয় থেকে যাচ্ছে।সব নাট্য দলের অবস্থা খুব খারাপ।তাই অর্থনৈতিক পড়িকাঠামো অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছে।তাই কারোর সামনে লক্ষ মাত্রা স্থির করা সম্ভব নয়। এমন কি সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে মঞ্চে অভিনয় করা ও সম্ভব নয় সেটা যেমন শিল্পী, কলা কুশলী রা জানে তেমন দর্শক রাও জানে। এই সেমিনার এর পরিচালক ও কলকাতা প্রেক্ষাপটের প্রধান অভিজিৎ গাঙ্গুলী জানালেন থিয়েটার একটা ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস। যে কোনো নাটক বা থিয়েটার কোনো সময় ই দূরত্ব বজায় রেখে মঞ্চস্থ করা যায় না ও যাবেও না।তবে আমরা সকলেই সম্পুর্ন স্বাস্থ্য বিধি মেনে সিনিটাইজার ব্যবহার করে আমাদের মহড়া র ঘরে অন লাইন নাটক শুরু করে দিয়েছি।এই কঠিন পরিস্থিতি তে থিয়েটার কে বাঁচিয়ে রাখতে পারে এক মাত্র অন লাইন। নাটক কে বিনোদন হিসাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ভার্চুয়াল ভরসা এখন।কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তা অনিশ্চিত।কেউ বলতে পারছে না। সামনেই দুর্গা পুজো।তাই ভার্চুয়াল থিয়েটার এর মাধ্যমে আমরা আমাদের দর্শকদের আনন্দ দিতে এই উদ্যোগ ও আমরা বদ্ধপরিকর.