By Ramiz Ali Ahmed
হলিউডি সিনেমায় যেমন লরেল-হার্ডি জুটি মাতিয়ে দিয়েছিলেন, ঠিক তেমনই টলিউডে ভানু-জহর জুটি।লীলা মজুমদার বলেছিলেন রঙ্গরস করতে গেলে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের কাছে নিজেকে বিলিয়ে দিতে।জহর রায় সেই দর্শনটাই আত্মস্থ করেছিলেন।আজ জহর রায়-এর ১০১ তম জন্মদিন।দু-তিন সিনের সামান্য সুযোগেই তিনি আলো কেড়ে নিতে পারতেন।সামান্য সংলাপকে বাড়িয়ে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিতে পারতেন।তাঁর আর ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের জুটি ছিল উত্তম-সুচিত্রা জুটির মতোই তুমুল জনপ্রিয় জন্মদিনে তাঁকে স্মরণ করে আজ জহর বন্দনা
জহর রায়ের জন্ম বাংলাদেশের বরিশালে ১৯১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর।বাবা সতু রায়ও ছিলেন নির্বাক যুগের বেশ নামকরা অভিনেতা,কিন্তু তাতে অবশ্য ছেলের বিশেষ সুবিধে হয়নি।সতু রায় বরিশাল থেকে চলে আসেন কলকাতায়,স্ত্রী আশালতা আর পুত্র জহরকে নিয়ে।জহরের স্কুল জীবন এই কলকাতাতেই।নারকেল ডাঙা হাই স্কুল থেকে ১৯৩৬ সালে তিনি ম্যাট্রিক পাস করেন।এক সময় জমিয়ে অভিনয় করলেও জহর পিতা সতু পরে সেভাবে অভিনয়ের সুযোগ না পেয়ে চাকরি নিয়ে স্ত্রী সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে চলে যান পাটনায়।সেই সূত্রে জহর রায়ের বেশ কয়েক বছর ওখানেই কাটে।জহরের অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ জন্মেছিল বাবা-কেই দেখে।জহর পাটনার বি এন কলেজ থেকে আই এ পাস করেন ১৯৩৮ সালে।জহর যখন বি এন কলেজে পড়ছেন তখন মুক্তি পেল ‘দ্য গ্রেট ডিরেক্টর’।জহর তখন সেসব ছবি বহুবার দেখতেন।বি এ পড়ার সময় সংসারের চাপে বন্ধ করে দিতে হয় পড়াশুনা।ফোর্থ ইয়ারের পর আর পড়া হয়নি।তিনি সেই সময় বহু কাজ করেছেন।পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাসিক কুড়ি টাকা মাহিনাতে প্রুফ রিডারের কাজ করেছেন।হিন্দি ইংরেজি দুটো ভাষাই খুব ভালো জানতেন।পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর সহকর্মী ছিলেন সাহিত্যিক নবেন্ধু ঘোষ।পরে যিনি চলচ্চিত্রের কাহিনি, চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক হিসেবে বেশ নাম করেছিলেন।দুজনেই বেশ ভালো বন্ধু ছিলেন।প্রুফ রিডিং-এর কাজে বিশেষ মন বসছিল না।যোগ দিলেন ‘ইস্ট ইন্ডিয়া ফার্মাসিউটিক্যালস’ কোম্পানিতে মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভর চাকরিতে।১৯৩৮ থেকে ১৯৪২ সাল পর্যন্ত চাকরি করেছেন ইস্ট ইন্ডিয়া ফার্মাসিউটিক্যালসে।এই চাকরিটিও আর ভালো লাগলো না।খুললেন দর্জির দোকান।বেশ ভালো রোজগার হচ্ছিল।এক দর্জির কাছ থেকে শার্ট-প্যান্ট কাটাও শিখে নিয়েছিলেন।হঠাৎ একদিন এক খদ্দের তাঁকে কাপড় চোর বলায়,তাঁর খুব আত্মসম্মানে লেগেছিল।তুলে দিলেন দর্জির দোকান।
জহরের প্রথম থেকেই আদর্শ ছিল চার্লি চ্যাপলিন।পাটনায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে চ্যাপলিনকে নকল করে কথা বার্তায় নানা অঙ্গভঙ্গিতে আনন্দ দিতেন দর্শকদের।তিনি চ্যাপলিনকে এমন করে নকল করতেন যে তাঁকেই মনে হতো সত্যিকারের চার্লি চ্যাপলিন।পাটনায় লোকমুখে তাঁর নামই হয়ে গেল ‘চার্লি’।এসময় পাটনায় অনুষ্ঠান করতে গিয়েছিলেন সে সময়ের এক জনপ্রিয় কৌতুকাভিনেতা অজিত চট্টোপাধ্যায়।সেই অনুষ্ঠানে জহরের চার্লি প্রদর্শন দেখে তিনি মুগ্ধ হন এবং জহরকে তিনি খুব প্রশংসা করেন।
অর্ধেন্ধু মুখোপাধ্যায় তখন কলকাতায় বেশ নাম করেছেন।তাঁর ডাকনাম ছিল কালাচাঁদ।জহর তাঁকে বলতেন কাকাচাঁদদা।সেবার তিনি পাটনায় এলেন থিয়েটার করতে।এমনিতেও তিনিও বিহারের মানুষ।সেখানেই জহর তাঁর কালাচাঁদ দা কে ধরলেন সিনেমায় নামানোর আর্জি নিয়ে।অর্ধেন্ধু বাবু বললেন-সিনেমায় নামতে গেলে কলকাতায় আসতে হবে।
সিনেমায় অভিনয়ের জন্য সব ছেড়ে ছুড়ে দিয়ে মাত্র ৫০ টাকা পকেটে নিয়ে ট্রেনে কলকাতাগামী এক বরযাত্রীদের সঙ্গে আলাপ করে তাদের ভিড়ে চলে এলেন কলকাতায়।বেঁচে গেল ট্রেন ভাড়া।কলকাতায় এসে দেখা করলেন তাঁর কালাচাঁদ(অর্ধেন্দু মুখোপাধ্যায়)দার সঙ্গে।অর্ধেন্ধু বাবু শুধু মুখের কথাতে নয় বাজিয়ে নিতে চাইলেন জহরকে।দেখতে চাইলেন তাঁর অভিনয় ক্ষমতা।জহর রায় তৎক্ষণাৎ তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে চ্যাপলিনের গ্রেট ডিরেক্টর হয়ে উঠলেন।পরীক্ষায় সসম্মনে উত্তীর্ণ হলেন জহর।অর্ধেন্ধু মুখোপাধ্যায়ের ‘পূর্বরাগ’ ছবিতেই জহর রায়ের অভিষেক ঘটল।তখন ১৯৪৭ সাল।যদিও সুশীল মজুমদারের ‘সাহারা’ ছবিটি তাঁর প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি।জহরের প্রায় দুবছর পর ১৯৪৯ সালে অভিনয়ে অভিষেক ঘটে ভানুর শুধু সিনেমার অভিনয় ক্ষেত্রে নয় বয়সের মাপকাঠিতে ভানুর থেকে জহর এক বছরের সিনিয়র।জহরের ত্রিশ বছরের অভিনয় জীবনে তিনশোর কাছাকাছি ছবিতে অভিনয় করেছেন।ভানু-জহর জুটি কতটা জনপ্রিয় ছিল এটা থেকে বোঝা যায় যখন তাঁদের নামেই ছবি হয়।যেমন ‘ভানু গোয়েন্দা জহর অ্যাসিসটেন্ট’,’এ জহর সে জহর নয়’,’ভানু পেল লটারি’।
সিনেমা ছাড়াও জহর প্রচুর পাড়ার ফাংশন করেছেন,কমিক স্কেচ আর নাটক তো ছিলই।১৯৫৩ সালে রংমহল নাট্যমঞ্চে নিয়মিত শিল্পী হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন।পরে সাবিত্রী দেবী ও তাঁর পরিচালিত শিল্পীগোষ্ঠীর পক্ষে ওই মঞ্চ ভাড়া নিয়ে তিনি নাটক নির্দেশনা শুরু করেন।
ফাংশন করার প্রবল নেশা ছিল জহরের।কোনও বাছবিচার করতেন না।আরেকজন জহর রায়ের খুব ভালো বন্ধু হয়ে উঠেছিলেন।তিনি অজিত চট্টোপাধ্যায়।যাঁর সঙ্গে তাঁর আলাপ পর্ব ঘটে গিয়েছিল সেই পাটনাতেই।দুজনেই কাছাকাছি থাকতেন।তাই তো প্রায়ই দেখা হতো।দুজনেই ছিলেন শিবরাম চক্রবর্তীর খুব বড় ভক্ত।মাঝে মধ্যেই এই দুই বন্ধু মুক্তারামবাবু স্ট্রিটের মেস বাড়িতে গিয়ে শিবরামের সঙ্গে দেখা করতেন।
জহর রায়ের অভিনীত অগনিত সিনেমার মধ্যে ‘ধন্যিমেয়ে’ ‘ছদ্মবেশী’ ‘ভানু গোয়েন্দা জহর অ্যাসিস্ট্যান্ট’ বিশেষভাবে উল্লেখ্য। ‘পরশ পাথর’ সিনেমাটিতে তিনি তুলসী চক্রবর্তীর একজন চাকর এর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। যদিও চরিত্রটি খুবই ছোটো ছিল তবে তাঁর অভিনয়ের গুনে সেটিও মানুষের মনে যায়গা করে নিয়েছিল। এমনকি ‘গুপী গাইন ও বাঘা বাইন’ সিনেমাটিতে কূট মন্ত্রনাদায়ী ষড়যন্ত্রী মন্ত্রীর ভূমিকাতেও অসাধারন অভিনয় করেছেন। ‘ছদ্মবেশী’ সিনেমাটিতে তিনি একটি গানও গেয়েছেন। তাঁর অভিনয় জীবনের শেষের দিকে তিনি ঋত্বিক ঘটকের সিনেমা ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’ তে অতিথি শিল্পী হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য ছবিগুলো হল- পুর্বরাগ(১৯৪৭),অঞ্জনগড়(১৯৪৮),ডাকিনির চর(১৯৫৫),উল্কা, পরশ পাথর(১৯৫৭),রাজলক্ষী ও শ্রীকান্ত (১৯৫৮)
,বাড়ি থেকে পালিয়ে’
অতল জলের আহবান(১৯৬২),
পলাতক, সূবর্ণরেখা(১৯৬৩),
অভয়া ও শ্রীকান্ত(১৯৬৫),
কাল তুমি আলেয়া(১৯৬৬),
নয়নিকা সংবাদ(১৯৬৭),
গুপী গাইন বাঘা বাইন(১৯৬৯),
নীশিপদ্ম(১৯৭০)
, ভানু গোয়েন্দা জহর অ্যাসিস্ট্যান্ট,
ধন্যি মেয়ে(১৯৭১),
মর্জিনা আবদুল্লা(১৯৭২)
যুক্তি তক্কো আর গপ্পো(১৯৭৪)
, যমালয়ে জীবন্ত মানুষ,
ছুটির ফান্দে(১৯৭৫)।
পর্দায় তাঁকে দেখে হাসির ফুলঝুরি ছুটলেও ব্যক্তিগত জীবনে খুবই রাশভারী ছিলেন জহর। কলেজ স্কোয়ারের কাছে কর্পোরেশন অফিস, তার পাশের গলি রাধানাথ মল্লিক লেনের ২১/১ নম্বরের তিনতলা বাড়িটির একতলায় স্ত্রী কমলা রায়, পুত্র সব্যসাচী আর তিন মেয়ে সর্বাণী, ইন্দ্রাণী ও কল্যাণী কে নিয়ে সপরিবারে ভাড়া থাকতেন তিনি।জহর রায়ের স্ত্রী কমলা রায় ডালসাইটে সুন্দরী ছিলেন।১৯৫০সালের ২৮ শে জানুয়ারি কমলা দেবীর সঙ্গে বিয়ে হয় জহর রায়ের।ছেলেমেয়েদের যাবতীয় দায়িত্ব স্ত্রী কমলা দেবীর উপর ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্তে থাকতেন।বাংলা ছাড়াও ওড়িয়া আর হিন্দিতে অনর্গল কথা বলতে পারতেন তিনি। এত ভাল হিন্দি জেনেও বোম্বে যাননি পরিবারকে ছেড়ে থাকতে হবে বলে। জীবনে একটিমাত্র হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছেন, বিমল রায়ের ‘পহেলা আদমি’। নেতাজি সুভাষচন্দ্র ও আইএনএ-র ওপর ভিত্তি করে তৈরি এই ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৪৮-এ। কণ্ঠশিল্পী হিসেবে নচিকেতা ঘোষের আত্মপ্রকাশ এই ছবিতে। জহর রায় এখানে এক বাঙালি সৈনিকের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। তিনিই লিপ দিয়েছিলেন ডাক্তারি-পড়ুয়া নচিকেতার গানটিতে।
গলি থেকে বেরিয়ে একাত্তর বাই একের পটুয়াটোলা লেনের ‘অমিয় নিবাস’-এর তিনতলায় দুটো ঘর নিয়েছিলেন জহরবাবু। এটাই ছিল তাঁর লাইব্রেরি কাম অফিসঘর।ঘর দুটো জুড়ে শুধু বই আর বই। নটসূর্য অহীন্দ্র চৌধুরীর থেকে পেয়েছিলেন বই পড়ার নেশা। শুধু পড়ার নয়, কেনারও।নতুন বইয়ের গন্ধ প্রাণভরে নিতেন।কাজের জন্য না বেরলে সেখানেই সারাদিন থাকতেন। রাতে গলির ভিতরের বাড়িতে শুতে আসতেন। খুবই ঘরোয়া ও সাধারণ জীবনযাপন করেছেন বরাবর। কোনওদিন নিজের গাড়ি ছিল না।ট্যাক্সিই ছিল একমাত্র সম্বল।
জীবনে একটা বড় ভুল করে ফেলেছিকেন জহর। একটি সিনেমা প্রযোজনায় হাত দিয়েছিলেন। পোড়খাওয়া অভিনেতা হলেও প্রযোজনার আট-ঘাট তাঁর জানা ছিল না।সেই সুযোগে তাঁর বন্ধুরাই তাঁকে ঠকিয়েছিল।কষ্ট করে জমানো এতদিনের টাকা সব শেষ হয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছিলেন। ছবিটির কাজও মাঝ পথে বন্ধ হয়ে যায়। উল্টে ঘাড়ে চেপে যায় ৭৫ হাজার টাকার দেনা। ছ’য়ের দশকে ৭৫ হাজার টাকা মানে বুঝতেই পারছেন আজকে সেই মূল্য ঠিক কতটা!সেই দেনা শোধ করতে গিয়েই ফাংশনের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। একেক দিন ২-৩ টি করে শো করতেন। সে ফাংশন হোক বা থিয়েটার কল শো হোক বা যাত্রা। বেড়েছিল মদ্যপানের মাত্রাও।দুঃখ পেলেই মদ্যপানে ডুবে যেতেন।এই অতিরিক্ত মদ্যপান জহরের মৃত্যুর অন্যতম কারণ হিসাবে অনেকেই মনে করেন। জহরের প্রাণের বন্ধু ভানু বলতেন-জহর ওভার ওয়ার্কে মারা গিয়েছে।শরীর দ্রুত ভাঙছিল। একটা সময় স্বাস্থ্যের প্রতি দারুণ নজর ছিল জহরের।বাতাসার সঙ্গে পেঁপের রস দিয়ে খেতেন ছাগলের দুধ।কিন্তু পরে লিভার আর পেরে উঠছিল না।বারে বারে ফিরে আসছিল জন্ডিস। অনিয়ম করতেন। ইনসুলিন নিয়ে অনেক সময় না খেয়ে চলে যেতেন। ১৯৭৪ সালে শ্যুটিং হয় ঋত্বিক ঘটকের ‘যুক্তি তক্কোর …’। ওই সময়ই মহানায়কের সঙ্গে ‘ব্রজবুলি’। তখন চেহারা প্রায় কঙ্কাল। সিনেমার কেউ আর কাজ দিতে চায় না, এড়িয়ে যেতেন সবাই। রংমহলই ছিল সে সময়ে তাঁর সম্বল। ওই মঞ্চেই রিহার্সাল করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তাঁর এক বন্ধুর সহায়তায় স্ত্রী কমলা দেবী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করেন। ভর্তি করার পরের দিনই সকালে সেই বন্ধু এসে খবর দেন, জহর আর নেই। ১৯৭৭ সালের ১লা আগস্ট।ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোনে খবর দেওয়া হয়। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়।একসময়ের এমন জনপ্রিয় অভিনেতার শেষ যাত্রায় টলিউড ইন্ডাস্ট্রির মাত্র এই দুই অভিনেতাই উপস্থিত ছিলেন।ভানু আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘‘জহরের কি দেশের কাছে এইটুকুই পাওনা ছিল সৌমিত্র?” খবর পেয়ে জহরকে শেষ দেখা দেখতে এসেছিলেন সুচিত্রা সেন। বেথুন কলেজের সামনে দাঁড়ায় শোক মিছিল। গাড়ি থেকে নেমে লরিতে ওঠেন সুচিত্রা। অস্ফুটে বলেছিলেন, ‘‘তুমি চলে গেলে চার্লি!’’ তারপর নিচু হয়ে মৃতের কপালে এঁকে দিয়েছিলেন চুম্বন।
জহর ঘটি ছিলেন না , বরিশালেরই সন্তান। তবুও তার ব্র্যান্ড ঘটি। জহর দাঁড় করিয়েছিলেন নিজস্ব বৈশিষ্ঠ্য। প্যান্ট, শার্ট, গেঞ্জি এবং ঘটির বাচন ভঙ্গি, সাথে শারীরিক অভিব্যাক্তি -এই নিয়েই জহর। আর আমাদের ভানু মানেই ধুতি এবং হাতা গোটানো শার্ট বা গেঞ্জি সাথে বাঙাল উচ্চারণ -“এর মইধ্যে আবার ছা লইয়া আইলি”!
এই দুইজন সম্পর্কে বলতে গিয়ে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেন – “জহর-ভানু হলেন, অনলি গ্রেসফুল আর্টিস্ট। এদের অভিনয়টা ছিল শরীর-মন-আত্মা জুড়ে”।
হরিহর আত্মা ভানু ,জহরের ছয় বছর পর মারা যান।
এহেন অভিনেতা জহর রায়ের শততম বর্ষ গেল গতবছর অনাড়ম্বর ভাবেই।আর এবছর শতবর্ষ বছর ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের।ভাবতে অবাক লাগে এহেন এই অভিনেতার কি এতটুকুই সম্মান প্রাপ্তি ছিল!
তথ্যঋন:জহর রায় সম্পর্কিত বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশিত লেখা