✍️কেকা আইচ
সম্প্রতি মছলন্দপুরের রাজবল্লভপুর হাইস্কুল মাঠে তিনদিন ধরে অনুষ্ঠিত হলো মছলন্দপুর মনীষা ও ইমন মাইম সেন্টারের যৌথ উদ্যোগে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, অনুষ্ঠান এবং নাট্য উৎসব। এবছর ছিল এই উৎসবের ১৫ তম বর্ষ। প্রথম দিন সকাল সাড়ে ছটায় রোড রেসের মাধ্যমে এই উৎসবের শুভ সূচনা হয়। প্রায় ১০০ জন প্রতিযোগী এই রোড রেসে অংশগ্রহণ করেন। তারপর ছিল সারারাত্র ব্যাপী ১৬ দলীয় ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতা। দ্বিতীয় দিন সকাল থেকে ছিল অংকন, নৃত্য ও ক্যুইজ প্রতিযোগিতা। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় মনীষার ছোট বন্ধুদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আবৃত্তি, নৃত্য, সংগীত দিয়ে সাজানো ছিল মনীষার এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এদিনের সন্ধ্যার সর্বশেষ আকর্ষণ ছিল মছলন্দপুর ইমন মাইম সেন্টারের নতুন প্রযোজনা গীতি-নৃত্যনাট্য “আলিবাবা”। ধীরাজ হাওলাদারের পরিচালনা ও আলপনা সরকারের নৃত্য পরিচালনায় এই গীতি-নৃত্যনাট্যটি সকল দর্শকের মন কাড়ে। প্রযোজনায় বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের মনে স্থান করে নিয়েছেন বিষ্ণু রায়, নিকিতা সরকার, সৃজা হাওলাদার, সুখেন্দু বিশ্বাস, কমল মন্ডল, অনুপ মল্লিক, সীমা মাহেলি, প্রীতি দাম, জয়ন্ত সাহা প্রমুখরা। উৎসবের শেষ দিন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনের দিন সকালে পদযাত্রা করে নেতাজি মূর্তি পাদদেশে এসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং নেতাজীর প্রতি সম্মান জ্ঞাপন এর মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। তারপর একে একে আবৃত্তি ও সংগীত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় এরপর ছিল বাংলার নবজাগরণের পথিকৃৎ রাজা রামমোহন রায়ের ২৫০ তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁর জীবন ও কাজ সম্পর্কে আলোচনা। সন্ধ্যায় ছিল এই তিন দিন ধরে অনুষ্ঠিত সমস্ত প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টজনেরা। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব অজিত সাহা, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ক্রীড়াবিদ জ্যোতিগোপাল দাস, অধ্যাপক অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, মনীষা সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি দেবব্রত বিশ্বাস প্রমুখরা। এরপর মঞ্চস্থ হয় মনীষার ছোটদের নৃত্যনাট্য “হিংসুটে দৈত্য”। যার পরিচালনায় ছিলেন শিবানী হালদার। তারপর ছিল গোবরডাঙ্গা নাবিক নাট্যম নাট্য দলের এবছরের সফলতম প্রযোজনা “পাখি”। নাট্যকার মনোজ মিত্রের লেখায়, পরিচালনা ও অভিনয়ের গুনে জীবন অধিকারী এই নাটকটিতে প্রাণসঞ্চার করেছেন। অন্যান্য অভিনেতারা- আলপনা সরকার, শ্রাবণী সাহা, অবিন দত্ত তাদের অভিনয় দক্ষতার মাধ্যমে দর্শকদের মন জয় করেছেন। উৎসবের শেষ উপস্থাপনা ছিল মছলন্দপুর ইমন মাইম সেন্টারের ছোটদের মূকাভিনয় “কম্বল” ও “দেখা”। যা প্রতিবারের মতই দর্শকদের আনন্দ দান করে। সবকিছু মিলে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন-কে কেন্দ্র করে তিন দিনের এই যৌথ উৎসব প্রবল উৎসাহ ও উদ্দীপনায় যথেষ্ট সাফল্যতার সাথে সম্পন্ন হল বলা যায়। ইমন মাইম সেন্টারের কর্ণধার ধীরাজ হাওলাদার জানান- “এবছর আমাদের এই অনুষ্ঠানটি ১৫ তম বর্ষে পদার্পণ করল; বিগত বছরগুলিতে যেভাবে এলাকার সমস্ত মানুষ আন্তরিকভাবে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তেমন ভাবেই সকলে মিলে ছোটদের চরিত্র ও ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য এবং একটি সুস্থ সংস্কৃতিক পরিমণ্ডল বজায় রাখার উদ্দেশ্যে এই অনুষ্ঠানটি আরো বহু বছর চালিয়ে যেতে পারবো এই আশা রাখি।”