- সংবাদ প্রতিখনের বিশেষ সাহিত্য সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন ও সমাজের বিশিষ্ট মানুষদের সম্মাননা জ্ঞাপন তৎসহ সংবাদ প্রতিখন প্রকাশনায় বর্ষীয়ান কবি ও লেখক সুমিত দাঁ’র গল্প সংকলন প্রকাশ এবং সংবাদ প্রতিখন আয়োজিত সারা বাংলা অনলাইন আবৃত্তি প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ।
সংবাদ প্ৰতিখন ২০১০ সাল থেকে উত্তর কলকাতার প্রাণকেন্দ্র শ্যামবাজার থেকে পথচলা শুরু। আজ সংবাদ প্ৰতিখন অন্তর্জাল মাধ্যমেও উপলব্ধ। শুধুমাত্র সংবাদ পরিবেশন নয়, সমাজের নানা কাজে সংবাদ প্রতিখন এগিয়ে রয়েছে আজ তার সাধ্যমতো। এই কাজে সংবাদ প্রতিখন পাশে পেয়েছে নানা গুণী মানুষজনকে। বিগত দু বছর আগে সংবাদ প্রতিখন শুরু করে সমাজের সেই সকল গুণী, সম্মানীয় মানুষদের হাতে ‘জীবনকৃতি সম্মান’ নামক ক্ষুদ্র সম্মাননা তুলে দিতে তাঁদের শ্রদ্ধাপূর্ণ সম্মান প্রদর্শণ করতে, যাঁরা নিজেদেরকে তুলে ধরেছেন নিজস্ব কাজের দ্বারা।
রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে শূন্য থেকে শুরু করে আজ নিজেদের যোগ্যতায় যে সকল উদ্যোগপতি সুপ্রতিষ্ঠিত, তাঁদের যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শণ করে তাঁদের হাতে প্রতিখন উদ্যোগপতি সম্মান তুলে দিচ্ছে বর্তমান বছরে।
এর সঙ্গে সঙ্গে আজ থেকে সংবাদ প্রতিখন সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি শুরু করল পুস্তক প্রকাশনা। সংবাদ প্রতিখন প্রকাশনা থেকে বর্ষীয়ান কবি ও লেখক সুমিত দাঁ’র গল্প সংকলন ‘উল্কা’র মোড়ক উন্মোচন ও আজ।
বাংলা সাহিত্যকে যথাযথ সম্মান দিয়ে সংবাদ প্রতিখন প্রতিবছর প্রকাশ করে একটি করে বিশেষ সাহিত্য সংখ্যা। সংবাদ প্রতিখনের বিশেষ সাহিত্য সংখ্যা ২০২৪ এর আত্মপ্রকাশ ঘটলো এই অনুষ্ঠানে।
নবীন প্রতিভ বিকাশে সংবাদ প্রতিখন প্রথম দিন থেকেই অগ্রগণ্য ভূমিকা নিয়ে পথ চলছে। বঙ্গ সংস্কৃতির প্রসারে আর এই ভাবনাতেই সংবাদ প্রতিখন প্রতিবছর আয়োজন করে নানা সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার। কয়েকমাস আগে আয়োজন করা সারা বাংলা অনলাইন আবৃত্তি প্রতিযোগিতার সফল ১৮ জন প্রতিযোগীদের হাতে পুরস্কার ও শংসাপত্র তুলে দেওয়া হচ্ছে আজ।
আগমীর প্রজন্মদের বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গে এক যোগসূত্র স্থাপনে সংবাদ প্রতিখন চালু করেছে অন্তর্জাল মাধ্যমে অডিও অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে একটি অনুষ্ঠান, সেটি বারো বছর পর্যন্ত বালক-বালিকাদের গান, আবৃত্তি, যন্ত্রসংগীত, তবলা ইত্যাদী সহযোগে ‘ছোটদের বৈঠক’ নামক অনুষ্ঠান যেটি ইতিমধ্যেই ১৯টি পর্ব প্রচারিত হয়েছে এবং আগামী দিনেও প্রচারিত হতে চলেছে।
আজ যাঁরা সম্মানীত হলেন
প্ৰতিখন জীবনকৃতি সম্মান ২০২৪
অরুনাংশু বিশ্বাস
স্বাধীনতার এক বছর আগে অর্থাৎ ১৯৪৬ সালে জন্ম হুগলি জেলার বৈদ্যবাটিতে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্য শাখায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রী। ১৯৭২ সালের জুন মাসে যোগদান করেন আত্ম কাশবাণী কলকাতা কেন্দ্রে একজন ঘোষক হিসেবে। তারপর থেকে
নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে নিজের কণ্ঠ মাধুর্যে মুগ্ধ করেছেন আপামর বাঙালি সমাজকে। শুধুমাত্র আকাশবাণী কলকাতা ক কেন্দ্র নয়, আকাশবাণীর এফএম কেন্দ্রগুলি যেমন এফ এম গোল্ড, রেইনবো এফ এম সহ বিবিধভারতী কেন্দ্রেও একজন বরিষ্ঠ ঘোষক হিসেবে সফলতার সঙ্গে পরিচালনা করেছেন নানা জনপ্রিয় অনুষ্ঠান।
আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্রের প্রাত্যহিকী, বয়স্কদের আসর সহ নানা জনপ্রিয় অনুষ্ঠান নিজের সুললিত কণ্ঠ মাধুর্যে সার্থক করে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি। একটি বিষয় অনেকেরই অজানা ১৯৭৫ সালের ৯ আগস্ট কলকাতা দূরদর্শনের পথ চলার শুভারম্ভে যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হয়েছিল সেই অনুষ্ঠানের একমাত্র সঞ্চালক ছিলেন অরুনাংশু বিশ্বাস। আজও তিনি নিরলস ভাবে আগামী প্রজন্মদের আগামীর বাচিক শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করে চলেছেন। আজ সংবাদ প্রতিখন ধন্য এমন এক গুণী শিল্পী মানুষকে সম্মানিত করতে পেরে।
পন্ডিত স্বপন সেন
১৯৫২ সালের ৮ মার্চ উত্তর কলকাতার মোহনবাগান লেনে জন্মগ্রহন করেন স্বপন বাবু ৷ ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে গিটারের সুর মাধুর্যে জনগণকে মুগ্ধ করতে সক্ষম তিনি। রাজ্য সরকারের বঙ্গ সঙ্গীত সম্মান সহ এখনও পর্যন্ত তাঁর ঝুলিতে রয়েছে প্রায় ২০০০ এর ওপর পুরস্কার ও সম্মান। পন্ডিত স্বপন সেন গিটারের তালিম নেন গুরু অনাথবন্ধু মৌলিক ও কাজী অনিরুদ্ধর কাছে। ভারতরত্ন সত্যজিৎ রায়ের অধিকাংশ সিনেমার আবহ সঙ্গীতে সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন। বিশেষ করে উল্লেখ করা যায় ‘আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে’ গানটি। এছাড়াও মান্না দে, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, গোলাম আলী, জগজিৎ সিং, পন্ডিত রবিশঙ্কর, রবীন্দ্র জৈন, আরতি মুখোপাধ্যায়, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, অজয় চক্রবর্তী, সলিল চৌধুরী, রাহুল দেব বর্মন, কিশোর কুমার, আশা
ভোঁশলে, লতা মঙ্গেসকর সহ নানা প্রতিভাবান শিল্পীদের সঙ্গে সংগতে নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। এর সঙ্গে সঙ্গে কলকাতা দূরদর্শনের উদ্বোধনে ভূপেন হাজারিকার গানের সঙ্গে গিটারে সঙ্গত করেন তিনি।
২০১৫ সালে একই সঙ্গে লাভ করেন পন্ডিত উপাধি ও আন্তর্জাতিক সম্মান। এছাড়াও মহানায়ক উত্তমকুমরের সঙ্গে সোনার খাঁচা, হোটেল স্নো ফক্স সিনেমাতেও অভিনয় করেন পন্ডিত স্বপন সেন। ভারতের অন্যতম সুরকার রাহুল দেব বর্মনের অসাধারণ সৃষ্টি ‘দম মারো দম’ ও পিয়া তু আব তো আজা’ গানেও তাঁর অপরূপ হাতের জাদু আজ ইতিহাস। অসাধারণ হয়েও অতি সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত তিনি। আজও তাঁর দ্বার সকলের জন্য খোলা। আগামী প্রজনমদের জন্য পন্ডিত স্বপন সেন তৈরি করেছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজ গৃহে। বয়সে প্রবীণ হলেও মনে তিনি আজও নবীন। সংবাদ প্রতিখনের সঙ্গে ওনার সম্পর্ক নিবিড়। আজ সংবাদ প্রতিখন ধন্য এমন এক গুণী শিল্পী মানুষকে সম্মানিত করতে পেরে।
প্ৰতিখন উদ্যোগপতি সম্মান ২০২৪
রাজীব চক্রবর্তী
এই বাংলায় সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় ও শূন্য থেকে শুরু করে নিজেকে একজন প্রতিষ্ঠিত উদ্যোগপতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম ১৯৭৩ সালের ১৯ মার্চ হুগলি জেলার বৈদ্যবাটি শহরে জন্মগ্রহন করা রাজীব চক্রবর্তী। আজ ওনার তত্ত্বাবধানে ওনার প্রতিষ্ঠা করা সংস্থায় সাবলম্বী একগুচ্ছ মানুষ। শুধুমাত্র ব্যবসা নয়, রাজীব চক্রবর্তী মনে প্রাণে একজন আদ্যোপান্ত বাঙালি ও সমাজসেবী, আর তার প্রমাণ পাওয়া যায় তাঁর নানা কর্মকান্ডে। বঙ্গ সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতেও উনি বদ্ধপরিকর। সংবাদ প্রতিখন ধন্য আজকের অনুষ্ঠানে রাজীব চক্রবর্তীকে প্রতিখন উদ্যোগপতি সম্মানে ভূষিত করতে পেরে।
সুব্রত সুকুল
একটা সময়ে যাঁর স্বপ্ন ছিল দেশের সেরা পেণ্ট টেকনোলজিস্ট হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার। মুর্শিদাবাদের সেই মানুষটিই একসময়ে নিজের লোভনীয় চাকরি ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ভাবনা ছেড়ে শুরু করেছিলেন নিজের সংস্থা, নিজের রং কোম্পানী। আজ তাঁর সেই কোম্পানী ধীরে ধীরে ডানা মেলে রীতিমত প্রতিযোগিতায় দাঁড় করিয়েছে দেশের নামী দামী রং প্রস্তুতকারকদের। আর সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সংস্থার দ্বারা উপকৃত হচ্ছেন বহু মানুষ সরাসরি ও নানা ভাবে। একজন সফল ব্যবসায়ী হয়েও তিনি আজও অতি সাধারণ । বাংলার সংস্কৃতিয উন্নয়নে, বাংলার খেলাধুলার উন্নয়নে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। সংবাদ প্রতিখন ধন্য আজকের অনুষ্ঠানে সুব্রত সুকুলকে প্ৰতিখন উদ্যোগপতি সম্মানে ভূষিত করতে পেরে।
রণজিৎ চৌধুরী
বাংলার নির্মাণ শিল্পে একেবারে গোড়া থেকে শুরু করে আজ উজ্জ্বল এক নাম রণজিৎ চৌধুরীর তৈরি করা সংস্থার। আজ তাঁর সংস্থা শুধুমাত্র ব্যবসা নয় এর সঙ্গে সঙ্গে মানুষকে স্বাভাবিক ও সুন্দর জীবন যাপনের নিমিত্ত সাধারণের নাগালের মধ্যে নিয়ে এসেছে একগুচ্ছ প্রকল্প। এর সঙ্গে সঙ্গে পর্যটনের বিকাশেও এগিয়ে রয়েছে ওনার সংস্থা। শুধুমাত্র ব্যবসা নয় বঙ্গ সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছেন মুক্তমনা এই মানুষটি। বাংলা সংস্কৃতির বিকাশেও ওনার নিঃশব্দ অবদান অনস্বীকার্য।
সংবাদ প্রতিখন ধন্য রণজিৎ চৌধুরীকে প্রতিখন উদ্যোগপতি সম্মানে ভূষিত করতে পেরে।
প্রতিখন সেরা প্রতিভা সম্মান ২০২৪
ডাঃ অভিক রায়
আমাদের মধ্যে আজ এমন মানুষ বিরল যারা আমরা কিছু না কিছু হাঁটু বা জয়েন্টের ব্যাথায় কষ্ট পাই না। আর আমাদের সেই কষ্টকে লাঘব করতে আমাদের রাজ্যে নিরলস কাজ করে চলেছেন প্রখ্যাত অর্থোপেডিক ও ট্রমা সার্জেন ডাঃ অভিক রায়। ডাক্তারী জীবনে অতি স্বল্প সময়েই তিনি নিজের পেশায় আজ স্বনামধন্য হতে পেরেছেন শুধুমাত্র তাঁর অধ্যাবসায় দ্বারা। ইতালীর মিলান, সাউথ কোরীয়ার সিওল ও মুম্বাই এর ব্রিচ ক্যান্ডী হাসপাতালে ফেলোশিপ ডাঃ অভিক রায় আজও নিরবিচ্ছিন্নভাবে ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে সকল মানুষের পাশে। তাই শুধুমাত্র কলকাতায় বসে ডাক্তারী নয় আজও ওনার দেখা পাওয়া যায় গ্রাম বাংলার অভ্যন্তরে রোগীদের পাশে। নিজের ডাক্তারী জীবনে হাঁটু প্রতিস্থাপন, আংশিক হাঁটু প্রতিস্থাপন সমেত হাড় সংক্রান্ত নানা কঠিন অপারেশনে সেরে উঠেছেন আজ বহু মানুষ। ডাক্তারীর সঙ্গে ভালোবাসেন এই বাংলাকে, বাংলার সংস্কৃতিকে। সংবাদ প্ৰতিখন ধন্য ওনার হাতে ‘প্রতিখন সেরা প্রতিভা সম্মান-২০২৪’ তুলে দিতে পেরে।