ঝলমলে মিঠে রোদ। মাঠভরা কাশ ফুল। আকাশভরা পেঁজা তুলোর মত মেঘেদের সারি। বাতাসে আগমনী সুর। পুজো পুজো গন্ধ—আমাদের প্রিয় শরৎ কাল এসে গেছে। শরৎ উৎসবের কাল। আনন্দের উদযাপন। এই শরৎ কালকেই আলিঙ্গন করতে সাতদিনব্যাপী অভিনব শরৎ-উৎসব “শেফালী” অনুষ্ঠিত হচ্ছে জি ডি বিড়লা সভাগরে। ১৪ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে এই শরৎ-আরতি। এমন অভিনব শরৎ উদযাপনের আয়োজক ইনফোসিস ফাউন্ডেশন এবং ভারতীয় বিদ্যাভবন।
বাংলা সাহিত্য এবং সংষ্কৃতির আঙিনায় শরতের রূপ-রস-গন্ধের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। সেই কথা মাথায় রেখেই “শেফালী” প্রতি সন্ধ্যায় নানা আঙ্গিকে সেজে উঠেছে শরৎ-স্তুতিতে। সাত দিনে যেন সাত রঙ-বাহারি। গানে-কবিতায়-নৃত্যের তালে-চিত্রকলায় শরৎকে বরণ করে নেবে “শেফালী”। প্রথম দিন উদ্বোধনের পর ছিল পিয়াল ভট্টাচার্য পরিচালিত নাট্য “শরচ্চারু চক্রম”।শরৎ কালকে মাথায় রেখে গান-নৃত্য-নাটকের সমারোহে চিদাকাশ কলালয়া সেন্টার এই অভিনব নাট্য পরিবেশন করেছে। একেক দিন একেক রকমের আয়োজন। একদিন থাকছে ‘সোনা রঙের শরৎ’। এই বিভাগটি গান-নৃত্য-কবিতা-অঙ্কনের সমবেত ঝংকার। নৃত্যের তালে তালে রবীন্দ্রনাথের গান থেকে কিটসের কবিতা,সঙ্গে লাইভ পেইন্টিং–এক অন্যরকম শরৎ-বন্দনার সাক্ষী হতে চলেছে কলকাতা। গানে সপ্তক সানাই, কবিতায় তন্ময় চক্রবর্তী, নৃত্যে সায়নী এবং অঙ্কনে রিঙ্কু ভদ্র– একঝাঁক নতুন শিল্পীর সমবেত উদযাপন। অন্যদিন থাকছেন দুই প্রতিভাবান গুণী শিল্পী সরোদ বাদক ইন্দ্রায়ুধ মজুমদার এবং কণ্ঠশিল্পী সৌনক চট্টোপাধ্যায়ের যুগলবন্দী “শরতের ছায়ানট”। ভাষ্যে থাকছেন আরেক গুণী শিল্পী সৌম্য কারফা। আরেকদিন থাকছে প্রীতি প্যাটেলের ‘অসিত আওয়ান্থা শরৎ’। শরতের নানা রূপ এই পরিবেশনায় ফুটে উঠবে। থাকবে বীরভূম সংষ্কৃতি বাহিনী নিবেদিত এবং উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় পরিচালিত নাটক ” বোগলেয় বায়েন”। এই অভিনব শরৎ-বন্দনা শেষ হবে সুশান্ত মাহাতো গ্রুপের ছৌনাচ দিয়ে।
সাতদিনব্যাপী এই শরৎ-উৎসব শুরু হচ্ছে প্রতিদিন সন্ধ্যে সাড়ে ছয়টা থেকে। কোনও প্রবেশমূল্য নেই। এমন অভিনব শরৎ-বন্দনার জন্য সাধুবাদ প্রাপ্য ভারতীয় বিদ্যা ভবন এবং ইনফোসিস ফাউন্ডেশনের। পুজোর আর বেশি দেরি নেই, শরতের আগমনী সুরে গা ভাসাতে আপনিও সামিল হন “শেফালী”-তে।