কখনো বাহা,কখনো ময়না রূপে তিনি মন কেড়েছেন দর্শকের।কিন্তু এবার একেবারে অন্যভাবে ধরা দিলেন অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী । লকডাউনের সন্ধ্যায় ফোনের ওপারে আড্ডায় মেতে উঠলেন ।জানালেন মনের মানুষের কথা , এগারো বছরের সম্পর্কের কথা।ফোনের এ প্রান্ত থেকে শুনলেন আনন্দ সংবাদ লাইভ-এর প্রতিনিধি পৃথা ঘোষ
প্রশ্ন:আপনাদের পরিচয় কীভাবে হয়েছিল?
সুদীপ্তা: আমরা ফ্যামিলি ফ্রেন্ড। এছাড়া ছোটোবেলায় আমি স্বর্ণশেখরের বাবা পার্থসারথী জোয়ারদারের কাছে অভিনয় শিখতাম,এক সাথে তখন কাজ করেছি। সেখান থেকেই বন্ধুত্বের শুরু।
প্রশ্ন:কত বছর ধরে আপনারা রিলেশনে আছেন?
সুদীপ্তা:১১ বছর।কিন্ত কেউ জ়ানতো না আমারা রিলেশনে আছি ,ইভেন ফ্যামিলি মেম্বাররাও না। সবাই ভাবতো আমরা বেস্ট ফ্রেন্ড।
প্রশ্ন:কে প্রোপজ করেছিল?
সুদীপ্তা:স্বর্ণ প্রোপজ করেছিল। তখন আমরা ক্লাস এইট্ বা নাইনে পড়ি।
প্রশ্ন:কেন মনে হল ,হি ইজ দ্য ওয়ান?
সুদীপ্তা:কোনো বিষয়ে একটা মানুষের ডেডিকেশন আমাকে মুগ্ধ করে। ও যখন আমাকে প্রোপজ করেছিল,আমি বিশ্বাস করিনি।আমি ভেবেছিলাম এটা ইনফ্যাচুয়েশন।কিন্তু ও আমাকে ভুল প্রমান করে। এর দুই বছর পর আমি ওর প্রোপজাল এক্সেপ্ট করি। আমার প্রতি ওর ডেডিকেশন,কেয়ারিং আমাকে মুগ্ধ করেছিল।
প্রশ্ন:স্বর্ণশেখরদার এমন একটা অভ্যাসের কথা বলুন যা আপনার ভাল লাগে আর এমন একটা অভ্যাস যা আপনার খারাপ লাগে বা পরিবর্তন করা উচিত বলে মনে হয়
সুদীপ্তা:ভালো লাগে বলতে ,ও ভীষণ আন্ডারস্ট্যান্ডিং।ছেলেদের সাধারনত একটা ম্যানলি ইগো থাকে না,সেটা ওর মধ্যে একেবারে নেই। ও আরও আমাকে বলে কিরে তুই নাইট আউটিং এ,ডিস্কে যাসনা কেন?আমি তোকে কোনোদিন বাঁধব না,যেভাবে থাকতে চাস সেইভাবে থাকবি তুই। আর খারাপ অভ্যাস বলতে তেমন কিছুই স্বর্ণর মধ্যে নেই।
প্রশ্ন:আপনাদের সম্পর্ক অফিশিয়ালি অ্যানাউন্স করার সময় স্বর্ণশেখরদা লেখেন-আফটার আ লট অফ ফাইটস্,স্ট্রাগল,সিকরেসি,টুডে আই অফিশিয়ালি ডিক্লিয়ার আওয়ার রিলেশানশীপ।এত বছরের রিলেশন নিয়ে এত স্ট্রাগল এত লুকোচুরি কেন?
সুদীপ্তা:আসলে আমাদের মধ্যে একটা ভয় কাজ করত। যেহেতু আমরা ফ্যামিলি ফ্রেন্ড তাই মনে হত আমাদের রিলেশনটা কেউ মেনে নেবে না।এছাড়া অনেকে বাড়িতে জানিয়ে দিত আমাদের ব্যাপারে,তখন সবাইকে সামলানো ।তাছাড়া এটা ইনফ্যাচুয়েশন নয় সেটা আমাকে বোঝান ওর কাছে একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। আর যাই বলো লুকিয়ে প্রেম করার মজাই আলাদা।
প্রশ্ন:স্বর্ণদার সাথে কাটানো বিশেষ মুহূর্ত যা সবসময় মনে থাকবে?
সুদীপ্তা:একবার আমরা দুজনে লুকিয়ে সিকিমে ঘুরতে গিয়েছিলাম,বাড়িতে বলেছিলাম শিলিগুড়িতে শুটিং আছে।প্রতি মুহুর্তে ভয় করছিল যদি কেউ দেখে ফেলে।
প্রশ্ন:স্বর্ণদা আপনাকে ‘পাপা’ বলেন কেন?
সুদীপ্তা:এটার সেইভাবে কোনো কারন নেই।হঠাত করেই দুজন দুজনকে পাপা বলা শুরু করলাম।জানত প্রতিটি মেয়ে তার হাজবেন্ডের মধ্যে নিজের বাবার প্রতিফলন খোঁজে আর আমি ওর মধ্যে এটা খুঁজে পাই।তাই হয়ত ডাকি।
প্রশ্ন:কবে বিয়ে করছেন?
সুদীপ্তা:কথাবার্তা চলছে ।সম্ভবত ২০২২-২৩ এর মধ্যে করে ফেলবো।
প্রশ্ন:বিয়ের জন্য স্পেশাল কোনো প্ল্যানিং করেছেন?
সুদীপ্তা:সেই ভাবে এখনো কোনো প্ল্যানিং হয়নি।তবে আমরা ঠিক করেছিলাম আমাদের সম্পর্ক যদি বাড়ি থেকে মেনে না নেয়,তবে আমরা পালিয়ে গিয়ে পাহাড়ে বিয়ে করব। যদিও সেটা এখন আর সম্ভব না।এছড়া বাড়ির সবাই আমাদের মেনে নিয়েছে ।ওরা খুব খুশী আমাদের নিয়ে।স্বর্ণর মা বলেন,তোরা আগে কেন আমাদের জানালি না এত লুকোচুরি কেন করলি।
প্রশ্ন:যদিও করোনার কারনে এই বছর দূর্গাপূজোর আমেজে একটু হলেও ভাটা পড়েছে।তবুও পূজোর জন্য কিছু প্ল্যান করেছেন কী?
সুদীপ্তা:স্বর্ণর মামাবাড়িতে প্রায় ৭০-৮০ বছরের পুরানো দূর্গাপূজা হয়। তাই ছোটো থেকে পূজোর দিনগুলো আমার ওখানেই কাটে।যেহেতু বাড়ির পূজো ফলে ছোটো করে হলেও করতে হবে।প্রতিবারের মতো এবারও পূজো ওখানেই কাটবে।