✍️By Ramiz Ali Ahmed
এখন আমরা এক অস্থির সময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছি।সমাজের দিকেদিকে এখন অবক্ষয়ের ছবি।মনুষত্ব,সততা, আদর্শ,মূল্যবোধ যেন হারিয়ে যাচ্ছে ক্রমে ক্রমে। ‘বিবাদ নয়, সহায়তা, বিনাশ নয়, পরস্পরের ভাবগ্রহণ, মতবিরোধ নয়, সমন্বয় ও শান্তি।’ এমন সৌকর্যময় কথা বলতেন স্বামী বিবেকানন্দ।
অথচ স্বামীজির এই ভাবনা থেকে আমরা যেন দূরে বহু দূরে চলে যাচ্ছি।আর এই সময়েই মানুষের বিবেককে আয়নার সামনে তুলে ধরলেন নাট্য নির্দেশক জয়েশ ল তাঁর সাম্প্রতিক উপস্থাপনা ‘বিবেকনামা’র মাধ্যমে।
নাটকে আমরা দেখতে পাই স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শকে পাথেয় করে চলা এক ডাক্তারের জীবনী । মিছিলে গুলি খাওয়া আহত একটি ছেলেকে তুলে আনেন তাঁর বাড়িতে সেবা করার জন্য । প্রশাসন প্রমাণ করতে চায় ছেলেটি টেরোরিস্ট । ডাক্তার বাবু সেই সব কথা না মেনে, তার কাছে আগে আর্ত মানুষের সেবা, তারপর প্রশাসনিক কাজকর্ম । একটি মূল্যবান বার্তা স্বামীজী একদিন ডাক্তার বাবুকে স্বপ্নে দেখা দিয়ে বললেন মানুষ বড় কাঁদছে, মানুষ বড়ো অসহায়,তুই তাদের পাশে দাঁড়া । জীব জ্ঞানে শিব পুজো হয়, মন্দির নয়, মসজিদ নয়, গীর্জা নয়, দেবতা পড়ে আছেন পথের ধুলোয় । এরপর কি হয় তার জন্য ‘বিবেকনামা’ দেখতেই হবে।
নির্দেশক জয়েশ ল এর এই উপস্থাপনা খুব মর্মস্পর্শী এবং অতি সময়োপযোগী ।ধন্যবাদ জানাই নাট্যকার সুব্রত কাঞ্জিলালকে,এরকম একটি লেখনী উপহার দেওয়ার জন্য।
নাটকের প্রত্যেকটি চরিত্র ডক্টর অরবিন্দ খোরানা(অমিতাভ চ্যাটার্জী),করিম চাচা(অমর চক্রবর্তী),পিটার -আহত ছেলে(সৌরজিৎ বসু),সুজাতা (অর্পিতা পাল),অমিত পুলিশ ইনস্পেক্টর ( অভীক দাস),
সিনিয়র পুলিশ অফিসার সঞ্জয় দে ,হাবিলদার ও মিছিলের নেতা (বিরাজ),মিছিল এ সোনালী (মোনালিসা ভাওয়াল)-প্রত্যেকেই চরিত্র অনুযায়ী যথাযথ।তবে আলাদা করে নাম করতেই হয় ডক্টর অরবিন্দ খোরানা’র চরিত্রে অমিতাভ চ্যাটার্জীকে।
বাবলু সরকারের আলোর যথাযথ ব্যবহার, সন্দীপ মুখার্জীর আবহ ও আবহ প্রক্ষেপন, অজিত রায়ের মঞ্চ সব মিলিয়ে নেতাজীনগর সরস্বতী নাট্যশালা প্রযোজিত একটি সফল প্রযোজনা ‘বিবেকনামা’।