পিয়াসী মল্লিক
এখন টুম্পা ভালো আছে।বিকেলে টুম্পার বাড়িতে বসে আছে ফিরোজা।প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ে ফিরোজাকে অনেক সংগ্রাম করেই পড়াশোনায় এগিয়ে যেতে হয়েছে।জন্ডিস আর আলসার রোগে পিতা প্রয়াত মাত্র ৫৪ বছর বয়সে।ছোট বোন টুম্পা তখন ষষ্ঠ শ্রেণীতে।নামী সংগীত শিক্ষকের কাছে ক্লাসিক্যাল,রবীন্দ্রসংগীত ও নজরুলগীতি শিখত।ভালো গাইত।লেখাপড়াতেও মন্দ ছিল না।
-কি ভাবছ দিদি?
-কিছু না টুম্পা।
-চা করছি-চিনি দেবো তো?
-না আমার হাই সুগার,জানিস তো।
আবার বিভিন্ন ঘটনা ফিরোজার মাথায় ভিড় করে।এক সুন্দর চেহারার তরুণ টুম্পার সাথে প্রতারণা করেছিল-তার উচ্চপদবী এবং অর্থবান বলে অহংকার ছিল।মানসিক আঘাত পেয়ে টুম্পা তখন ডিপ্রেশনে।যে তরুণের মানবিক আচরণ টুম্পাকে অবসাদমুক্ত করেছিল সে অর্থবান নয়।তবুও টুম্পা তাকে বিয়ে করেছে।
ফিরোজা স্বামীর আত্মীয়ের বিয়েতে গিয়েছিল স্বামীর সাথে।সেখানে কনের ছোটদা অযথা ফিরোজাকে অপমান করেছিল।ফিরোজা দুঃখ পেয়ে তার স্বামীকে জানিয়েছিল।উত্তরে স্মামী বলেছিলেন-তারা উচ্চবংশ অর্থাৎ তাদের উচ্চপদবী।
-উচ্চপদবী হলে কি নিরীহ নারীকে অযথা অপমান করার অধিকার থাকে?
ফিরোজার স্বামী কোনো উত্তর দেয়নি।
ফিরোজার এক আত্মীয় রুচিশীল সুচাকুরে সুদর্শন শেখ পদবিধারী যুবক বিয়ে করেছে খাঁ পরিবারে।ফিরোজা আমন্ত্রিত হয়ে সেই বিয়েতে গিয়েছিল।সুশিক্ষিত সুন্দর খাঁ পরিবারের আন্তরিকতা ও সুন্দর ব্যবহার ফিরোজা আজও ভোলেনি।
এরকম বহু ঘটনা ফিরোজা দেখেছে।পদবী উচ্চ নয় তবুও ভালো মনের অনেক মানুষকে ফিরোজা দেখেছে-তাদের সুন্দর আচরণ ভালো লাগে তাই শ্রদ্ধা বা স্নেহ আসে।
তাই প্রশ্ন-কে উচ্চ?ভালো মনের কোনো মানুষ নাকি উচ্চপদবীধারী অথচ অহংকারী বা হিংসুটে কোনো মানুষ?