✍️রামিজ আলি আহমেদ
দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বিরাট পরিবর্তন নিয়ে আসছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের নাম বদল করে করা হল শিক্ষা মন্ত্রক।যদিও ৩৫ বছর আগে এটিই ছিল মন্ত্রকের নাম।স্বধীনতার পর থেকেই শিক্ষা মন্ত্রক নামেই পরিচিত ছিল এটি।কিন্তু ১৯৮৫ সালে রাজীব গান্ধীর আমলে এই মন্ত্রকের নাম হয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক।
এত বছর পর শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হল।দশম ও দ্বাদশ শ্রণিতে আর নতুন করে বোর্ডের পরীক্ষা নেওয়া হবে না। নতুন শিক্ষানীতিতে ৫+৩+৩+৪ মডেল কার্যকর হবে বলে নয়া শিক্ষানীতিতে অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্র মন্ত্রিসভা। এখানে প্রাথমিককেও আনা হচ্ছে স্কুলের আওতায়। ক্লাস ওয়ান ও ক্লাস টু-কে রাখা হচ্ছে প্রি-প্রাইমারির মধ্যে। এটিকে বলা হচ্ছে ফাউন্ডেশন কোর্স।নতুন ব্যবস্থায় নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত একটি স্টেজ করা হচ্ছে। এটিকে বলা হচ্ছে সেকেন্ডারি স্টেজ।
নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ৪ বছরের মধ্যে ৪০টি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে।দ্বাদশ শ্রেণীতে ৮টি সেমিস্টারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।ফলে কার্যত দশম শ্রেণির গুরুত্ব অনেকটাই কমে যাচ্ছে বলেই মনে করা হচ্ছে।নতুন শিক্ষা ব্যবস্থায় বিজ্ঞান,কলা ও বাণিজ্য বিভাগ বলে কিছু থাকছে না।পদার্থবিদ্যা,রসায়নের মতো বিষয় নিয়ে পড়লেও ফ্যাশন ডিজাইনিং পড়ার সুযোগ থাকছে।
এই চার বছরের কোর্স হবে মাল্টি ডিসিপ্লিনারি। অর্থাৎ পড়ুয়ারা তাদের পছন্দের বিষয় বেছে নিতে পারবে। তবে দেখতে হবে ওই কম্বিনেশন পরবর্তিতে উচ্চশিক্ষায় যেন অসুবিধার কারণ না হয়।
স্নাতক স্তরে প্রতি বছরের পর সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। দ্বিতীয় বছরের পর দেওয়া হবে ডিপ্লোমা। তৃতীয় ও চতুর্থ বছরের পর দেওয়া হবে স্নাতক সার্টিফিকেট।আরও একটি বদল এসেছে স্নাতকোত্তর ব্যবস্থায়। সেখানে কেউ গবেষণা করতে চাইলে চার বছরের ডিগ্রি কোর্স করতে পারেন। তিন বছর স্নাতকস্তর এবং এক বছর স্নাতকোত্তর পড়ার পরে সরাসরি পিএইচডি করতে পারবেন। এম ফিল করার প্রয়োজন পড়বে না।এছাড়াও পঞ্চম শেণী পর্যন্ত পর্যন্ত মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষায় শিক্ষার উপর দেওয়া হয়েছে গুরুত্ব।
বিজেপি সরকারের নির্বাচনী ইস্তেহার ছিল শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার। এনিয়ে একটি কমিটি গঠিত হয়। সেই কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন ইসরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান কে কস্তুরিরঙ্গন। গত বছর কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিওয়ালের কাছে ওই প্রস্তাব জমা দেয় কমিটি। সেই খসড়া প্রস্তাব কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছে বলে জানিয়েছে পোখরিওয়াল।তবে সূত্রের খবর, নয়া শিক্ষানীতিতে একস্ট্রা কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটি বলে কিছুই থাকবে না। বদলে মিউজিক, খেলধুলা , হাতের কাজ সবই শিক্ষার মূল অংশ করে তোলা হবে।