✍️অরুণ কুমার চৌধুরী
অঙ্গন বেলঘরিয়ার সাম্প্রতিক প্রযোজনা “তফাৎ শুধু শিরদাঁড়ায়” মঞ্চস্থ হলো শিশির মঞ্চে।বর্তমান শিক্ষা ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান সীমাহীন দুর্নীতির বিরুদ্ধে এক জোরালো প্রতিবাদ। এ নাটক শুধু দূর্নীতির বিরুদ্ধে নয় আজকের এই ভোগস্বর্বস্য সমাজে আত্বকেন্দ্রিকতার বিরুদ্ধে সজোরে কুঠারাঘাত। চিরায়ত প্রতিরোধের আধুনিক ভাষ্য।
একটি মফঃস্বল শহরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর বিদ্যালয়ের হিসাব পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখলেন যে, বিদ্যালয়ের নূতন ভবন নির্মাণের জন্য সর্ব শিক্ষা মিশন থেকে প্রাপ্ত টাকাটা ভবন নির্মাণের জন্য ব্যাবহৃত হয় নি। টাকাটা যে তছরুপ হয়েছে সেটা তিনি বুঝতে পারলেন এবং এটাও বুঝলেন যে, এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ও বর্তমান পরিচালক সমিতির সভাপতি। তিনি যখন এই দূর্নীতির জট খুলতে চাইলেন তখন তারা অবিনাশ বাবুকে প্রথমে বুঝিয়ে ও পরে গুন্ডা দিয়ে নানারকম ভাবে চাপ দিয়ে এই কাজ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু সৎ, সাহসী প্রধান শিক্ষক তার সহকর্মীদের সমর্থন না পেয়েও নিজের চেষ্টায় সেই দূর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান এবং অবশেষে তাদেরকে দোষী সাব্যস্ত করেন।
অভিনয়ের ক্ষেত্রে অভি সেনগুপ্ত তার অভিনয়ের মাধ্যমে অবিনাশের চরিত্রের দৃঢ়তা সুচারুরূপে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তপন বিশ্বাসের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক হিসেবে অভিনয় তার অন্য অভিনয়কে ছাপিয়ে গেছে। পরিচালন সমিতির সভাপতি হিসাবে নিলয় সেন ও অবিনাশের স্ত্রীর চরিত্রে বেবী সেনগুপ্ত নাটক উপযোগী। তবে অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের অভিনয়ে আরো সাবলীলতা প্রয়োজন। লাট্টু রুপি গুঞ্জন এর অভিনয় নাটকটিকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। তপন বিশ্বাসের আবহ ও অরূপ ব্যানার্জীর আলো নাটকটিকে দর্শকদের কাছে মনোগ্রাহী করে তুলেছে। পরিচালক হিসাবে অভি সেনগুপ্ত মোটামুটি সফল।তবে যে সমস্ত ত্রুটি বিচ্যুতি রয়েছে সেগুলোর দিকে নজর দিতে হবে। সব শেষে নাট্যকার সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় কে কুর্নিশ এই সময়ে এরকম একটি জোরালো প্রতিবাদী নাটক উপহার দেবার জন্য।