নিজস্ব প্রতিনিধি:দেবীপক্ষের শুরু। বাঙালির ঘরে ঘরে আগমনীর সুর বেজে উঠেছে। বাঙালির প্রাণের উৎসব এই দুর্গাপুজো। বছরজুড়ে বাঙালি পৃথিবীর যে প্রান্তেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকুক না কেন, পুজোর সময় ঘরে ফেরে সব বাঙালি। উৎসবের টানে শিকড়ে ফেরার তোড়জোড় শুরু হয়। এ যেন পুজোরই অঙ্গ। ঘরে ফেরার আনন্দ।
সময় এখন অনেক পাল্টেছে। ব্যস্ততা বেড়েছে। কাজের চাপ। হাজার একটা ঝক্কি-ঝামেলা। তাই পুজো এলেও বহু বাঙালির আর আগের মত ঘরে ফেরা হয় না। উৎসবে গা ভাসাতে পারে না। সাত সমুদ্দুর তেরো নদীর পাড়ে বসেই একরাশ মন-কেমন নিয়ে পুজো কাটিয়ে দিতে হয়। তারওপর এখন আবার অতিমারির ছোবল। ইচ্ছে থাকলেও ঘরে ফেরার উপায় নেই। এইসব উৎসব-বঞ্চিত প্রবাসী বাঙালিদের কথা মাথায় রেখেই অম্বরীশ মজুমদার লিখে ফেলেছেন এবারের পুজোর গান। আর সেই গানের সুরে পুজোর সময় বাঙালির ঘরে-ফেরার নস্ট্যালজিয়াকে আরও উসকে দিয়েছেন সুরকার রাতুল শঙ্কর। গানটি গেয়েছেন রূপঙ্কর, অনুপম রায়, ইমন চক্রবর্তী এবং লগ্নজিতা।
রাতুলের কথায়, “আমি ছোটবেলা থেকেই পৃথিবীর না না জায়গায় ঘুরেছি। কখনও তিনমাস, কখনও আবার এক সপ্তাহ বাইরে থেকে ঘরে ফেরার যে আনন্দ তা আমি বুঝি। তাই বহু বাঙালির পুজোর সময় ঘরে না-ফিরতে পারার কষ্টটা বুঝতে পারি। এই গানের সুরেও তাই একটা বিষণ্নতা রেখেছি। আর পাঁচটা পুজোর গানের থেকে অনেকটাই আলাদা। রূপঙ্করদার সঙ্গে এটাই আমার প্রথম কাজ। খুব ভাল লেগেছে কাজ করে। অনুপম, ইমন, লগ্নজিতা এরা সবাই আমার খুব প্রিয় মানুষ। গুণী শিল্পী। সবার সঙ্গে কাজ করেই খুব আনন্দ পেয়েছি।
” বন্ধু রাতুলের সঙ্গে কাজ করে খুব খুশি অনুপম রায়। তিনি বলেন, “প্রত্যেক বছরেই তো পুজোয় নতুন গান গাই, কিন্তু এবারের এই পুজোর গানটা আমার কাছে খুব স্প্যাশাল। রাতুল চমৎকার সুর করছে। এই জমজমাটি পুজোয় ঘরে ফেরার যে টান, শিকড়ে ফেরার যে টান তা খুব সুন্দর করে তুলে ধরা হয়েছে গানের মধ্যে।
” ইমন এর আগেও রাতুলের সঙ্গে কাজ করলেও পুজোর গান এই প্রথম। “রাতুলদার সঙ্গে কাজ করতে আমার সব সময়ই খুব ভাল লাগে। পুজোর সময় বাঙালির ঘরে ফেরার যে টান, রাতুলদার সুরে সেই আকুতি ধরা আছে। অম্বরীশদার গানের কথায় মন ছুঁয়ে গেছে। আমি ছাড়া বাকি যারা গান গেয়েছেন, প্রত্যেকেই অত্যন্ত গুণী শিল্পী। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করে ভাল লেগেছে।” , বলেন ইমন।
লগ্নজিতা এই প্রথম রাতুল শঙ্করের সুরে গান গাইলেন। তিনি বলেন, “রাতুলদার সঙ্গে একসঙ্গে অনুষ্ঠান করলেও একসঙ্গে কাজ করা কোনদিন হয়ে ওঠেনি। এতদিন পর সেই সুযোগ এল। আশা করছি গানটা সকলের ভাল লাগবে।
” রাতুলের সুরে গান গেয়ে খুশি রূপঙ্কর বাগচী। তিনি জানান সবার সঙ্গে কাজ করতে পেরে তাঁর খুব ভাল লেগেছে।
পুজোর গানটি তৈরিতে উদ্যোগ নিয়েছে সৃজন রিয়্যালটি। এই পুজোর গানের ভিডিওটির ভাবনা দেবজিত সাহার। পরিচালনায় মাহিরি বোস। এবারের পুজোয় ঘরে ফেরার গান শুনে সব বাঙালিই স্মৃতিমেদুরতায় ডুব দেবেন।