আনন্দ সংবাদ লাইভ :আগামী বছর দেশের পঁচাত্তরতম স্বাধীনতা দিবস, আর সেই উৎযাপনকে লক্ষ্য করেই এক অভিনব উদ্যোগ নিলো দক্ষিন চব্বিশ পরগনা জেলার মহেশতলা অঞ্চলে বড় হওয়া শুভজিৎ নস্কর। পঁচিশ বছরের শুভজিৎ জানায় “বেশ কয়েক বছর থেকেই স্বাধীনতার দিন সোশ্যাল নেটওয়ার্কে দেখি নানা প্রশ্ন ‘আমরা কি স্বাধীন? আমারা কি সত্যিই স্বাধীন? আমাদের কি স্বাধীনতা আছে?’ ইত্যাদি নানান প্রশ্ন আর সেখান থেকেই আমার মাথায় আসে আমরা কি সত্যিই নিজেরা জানি আমাদের স্বাধীনতার অধিকার? স্বাধীনতার দ্বায়িত্ব? ইত্যাদি। জানিনা! আসলে স্বাধীনতার চুয়াত্তর বছর পরেও দেশের বেশীর ভাগ মানুষ, সে শিক্ষিত অশিক্ষিত, ধণী গরীব, অফিসার থেকে শ্রমজীবী যাঁদের বড় অংশই জানে না তাঁদের সাংবিধানিক অধিকার, এমনকি দেশের সংবিধান দেখতে কেমন হয়? ফলত শাসকগোষ্ঠী নিজেদের হাতে ক্ষমতা রেখে মানুষকে শোষণ করে আসছে এবং মানুষও সেই শোষন হতে দিচ্ছে কারণ তারা জানে না যে সংবিধান তাকে কি কি অধিকার দিয়েছে এবং এটা কিছুটা উদ্দ্যেশ্যপ্রনোদিত ভাবেই এতদিন জানতে দেওয়া হয়নি।” আর সেই জায়গা থেকেই গত পঁচিশে আগস্ট থেকে সে শুরু করে তার এই উদ্যোগে “ঘরে ঘরে আম্বেদকর।” এবং এক সপ্তাহেই সে প্রায় নয় হাজার মানুষকে বাংলা সংবিধানের পিডিএফ পাঠাতে পেরেছে যাঁদের মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী সদস্যরাও আছেন। এই সচেতনতার লক্ষ তিনি আরো বলেন যে “হয়তো আগামী পাঁচ বা দশ বছর যদি আমরা এটা চালিয়ে যেতে পারি তাহলে দুর্নিতি অনেকখানি কমে যাবে। এবং প্রতিটা রাজনৈতিক দলও বাধ্য হবে সংবিধানকে মান্যতা দিয়ে চলতে। যদিও এখন অবদি এরাজ্যে আমি কোন বাধা পাইনি এমনকি এরাজ্যের বেশীরভাগ রাজনৈতিক দলের কর্মীরা তাঁর এই উদ্যোগে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।কিন্তু সমস্যা যেটা হচ্ছে সেটা আমাদের বাইশটি অনুমোদিত ভাষা থাকা সত্ত্বেও ইংরেজি বা হিন্দি ছাড়া সেভাবে বাকী ভাষাগুলোই সংবিধান প্রায় নেই এবং থাকলেও বিশেষত বাংলা সংবিধানে ব্যবহৃত শব্দও প্রচলিত নয় ফলত দূরত্ব রয়েই গেছে। আর দেশের সংবিধান না জানা মানেই দেশকে না জানা। বিশেষত এই সময়ে দাঁড়িয়ে যে অবক্ষয় চারপাশে চলছে তাতে এই প্রয়োজনীয়তা আরো বেশী আর তাই খুব সরল বাংলায় সংবিধান মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ায় আপাতত লক্ষ্য। আশা রাখছি সরকারের কাছে সে সাহায্য পাবো যাতে হয়তো আগামীতে পাঠ্যসুচীতে সংবিধান আবশ্যিক করা হবে। এবং এই বিষ্যে সব থেকে বেশী সাড়া পেয়েছি শিক্ষিত যুব সমাজের থেকে, তারা নিজেরা আমার থেকে পিডিএফ কপি নিয়ে পাথিয়েছে নইলে আমার একার পক্ষে স্মভব ছিলো না এত মানুষের কাছে পৌছানো। আর এই উদ্যগের সব থেকে বেশী সাহায্য এবং অনুপ্রেরণা পেয়েছি “বামসেফ” এর থেকে তাঁরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বইপত্তর, তথ্যাদি দিয়ে এবং মানসিক ভাবেও আমার পাশে থেকেছে। এবং আশা রাখছি আগামিতেও এভাবেই তাঁদের পাশে পাবো কারণ প্রকৃত দেশপ্রেমীরা কখনো দেশের ‘সংবিধান’ ও সংবিধানের প্রণীতা বাবা সাহেবের অবমাননা করবে না বা হতে দেবে না এবং আমার এই উদ্যোগ সম্পূর্ণভাবে অরাজনৈতিক একটি ভাবনা আগামীতে আমিও সেই নিরপেক্ষতা বজায় রাখবো। কিন্তু এসবের আগে আমি যেটা বলতে চাই সেটা হলো শুধু মাত্র সংবিধান পৌঁছে দেওয়া নয় যাতে প্রতিটি মানুষ নিজের এবং অন্যের সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে সচেতন হয় ও সংবিধান রক্ষার্থে সচেষ্ট হয়।”