✍️চন্দ্রিকা ভট্টাচার্য
গান আমার ছোট্টবেলার সাথী। বাড়ীতে বরাবর গানের পরিবেশ থাকার কারনে গানকে আপন করে নিতে আলাদা করে কোনো অভ্যেস করতে হয়নি। বিগত চার বছর ধরে ব্যক্তিগত জীবনে নানা রকম ঘটনার মধ্যে দিয়ে জীবনকে নতুন করে দেখতে শিখি এবং সেখান থেকেই নিজের সঙ্গীত সম্পর্কে আরো বেশী করে আবেগ ও নির্ভরশীলতা তৈরী হয়। পেশাগত ভাবে গায়িকা হওয়ার সুবাদে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের এবং বিভিন্ন পর্যায়ের গান গাইবার সুযোগ আমাদের মত গাইয়েদের হয়ে থাকে, যার অধিকাংশ গানের ভাবনা বা চরিত্রের সাথে আমাদের মনের বা চরিত্রের মিল থাকে না।কিন্তু নিজের গান, অর্থাৎ যে গান আমার মনের কথা বলে বা আমার জীবনবোধকে জাস্টিফাই করে, সেইরকম গান আমার শ্রোতাদের শোনাতে বড় ইচ্ছা করত। মনের ভিতরে নিজের গান, বা আজকাল যাকে বলে ইন্ডিপেন্ডেন্ট মিউজিক, করার এক অদম্য ইচ্ছা থেকে “চন্দ্রিকা ভট্টাচার্য প্রোডাকশনস” এর জন্ম। “কি চেয়ে কি পেয়েছি” প্রধানত একটি বাংলা গজল ধর্মী গান, যা আমার ধারণায় অধিকাংশ মানুষের জীবনবোধের কথা বলে। বিশ্বরূপ ঘোষ দস্তিদার-এর কথায় এবং সুরে এই গানটি আমার মনের খুব কাছের একটি গান হয়ে সারাজীবন রয়ে যাবে। এই গানটির ভিডিও কনসেপ্ট ভাবতে গিয়ে আদিত্য আর আমাকে বেশ চিন্তার মধ্যে পড়তে হয়েছিল কারন সাধারনভাবে গানটা শুনলে যেন একটা ব্যর্থ প্রেমের ছবি চোখের সামনে ভেসে ওঠে, আর সেখানেই ছিল আমার বড় আপত্তি। “না পাওয়া” আর “না ভালোবাসা” -র গল্প শুধুই পুরুষ ও নারীর সম্পর্ক জনিত এটা আমার কখনই সঠিক বলে মনে হয়না। আর তখনই আমার মায়ের জীবনের গল্পটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে। আমার মায়ের মতই অজস্র মায়েরা রয়েছেন যাদের জীবনে চাওয়া আর পাওয়ার সমীকরনটা একদম-ই আলাদা। সেই চিন্তা থেকেই এই ভিডিও টার গল্প রচনা হয়। ভিডিও শুট করতে গিয়ে আমার কাছের মানুষগুলোর এই রকম সহযোগীতা পাব তা আমার কল্পনার অতীত ছিল। প্রধান চরিত্রে আমার মা, সাথে পূজাদি (মা-এর চরিত্রে), আদিত্য (ডিঅপি)-র বাবা শ্রী তপন কুমার পাল (বাবা-র চরিত্রে), ছোট্ট মেয়ে আদৃতা, আমার বন্ধু শ্রাবনী শেষে আর একটি ছোট্ট মেয়ের ভূমিকায় আভর্ণা সবাই ভীষন রকম প্রাণ দিয়ে কাজটা করেছে। বিশ্বরূপ কাকুকে ভিডিও-র একটা ছোট্ট অংশে পেয়েছি,এটা আমার উপরি পাওনা আর কাকু-র ভালোবাসা। ভীষন ভালোবেসে যত্ন করে এই প্রথম মিউজিক ভিডিও-র কাজটা আমরা সবাই করেছি। এখন আপনাদের কাছে শোনার পালা যে আপনাদের কেমন লাগলো?