নিজস্ব প্রতিবেদক:একাধারে তিনি আগ্রা ঘরানার শিল্পী; অন্যদিকে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সমালোচক।বিদুষী অপর্ণা চক্রবর্তীর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে শহরে হতে চলেছে দুদিন ব্যাপী একটি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত সম্মেলন, আইসিসিআর অডিটোরিয়ামে, তারিখ ২২-২৩ এপ্রিল, বিকাল ৫:৩০ থেকে।
বিদুষী অপর্ণা চক্রবর্তী (১৯২৩-২০০৭) সঙ্গীত জীবন কয়েক দশক ধরে বিস্তৃত ছিল। তিনি হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আগ্রা ঘরানার একজন বিশিষ্ট কণ্ঠসঙ্গীত শিল্পী ছিলেন। পারফর্মিং আর্টিস্ট হিসাবে তাঁর একটা অত্যন্ত সফল কর্মজীবন ছিল এবং পরবর্তী সময়ে তিনি একজন অত্যন্ত সম্মানিত শাস্ত্রীয় সঙ্গীত সমালোচক হয়ে ওঠেন। কর্মজীবনে তিনি সঙ্গীত পরিবেশন, শিক্ষাদান এবং গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন।
অপর্ণা, মুকুল চক্রবর্তী তাঁর স্বামী এবং তাঁদের কয়েকজন বন্ধু বহু বছর ধরে কলকাতায় “ঝাঙ্কার মিউজিক সার্কেল” নামে এক সাংস্কৃতিক সংগঠন চালাতেন। এটি ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত (কণ্ঠ, যন্ত্রসংগীতের পাশাপাশি নৃত্য) প্রচার করে এবং ভারতের সমস্ত অঞ্চল থেকে শিল্পীদের আমন্ত্রণ জানাতো বর্তমান উস্তাদদের অনেকেই এই সঙ্গীত বৃত্তে তাঁদের প্রথম সঙ্গীত পরিবেশন করেছিলেন।
বিদুষী অপর্ণা চক্রবর্তী শতবার্ষিকী সঙ্গীত সম্মেলন ২০২৩ তাঁর শিষ্যরা এবং পরিবারের সদস্যদের উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছে।
হিন্দুস্তানি সঙ্গীতের পরিবর্তিত ঐতিহ্যের উপর একটি বক্তৃতা দেবেন পন্ডিত বিদ্যাধর ব্যাস, মুম্বাইয়ের বিশিষ্ট গবেষক, শিক্ষক ও গুরু।
ঐতিহ্যবাহী শ্লোক “গীতম, বাদ্যম, নৃত্যম, ত্রয়ং সঙ্গীত মুচ্যতে” এর সাথে মিল রেখে, উৎসবে কণ্ঠ ও যন্ত্রসঙ্গীতের পাশাপাশি নৃত্য পরিবেশন করা হবে। শ্রোতারা পন্ডিত অনিন্দ্য ব্যানার্জীর সুরশ্রীঙ্গার, শ্রী সায়ক মিত্রের রুদ্র বীণা এবং শ্রী উজ্জ্বলেন্দু চক্রবর্তীর সুরবাহার এর মতো বিরল বাদ্যযন্ত্র শোনার সুযোগ পাবেন।
আগ্রা ঘরানার কন্ঠ সঙ্গীত যার সাথে অপর্ণা যুক্ত ছিলেন তার প্রতিনিধিত্ব করবেন বেঙ্গালুরু থেকে আসা শিল্পী বিদুষী ভারতী প্রতাপ এবং অপর্ণার শিষ্যা শ্রীমতি অর্পিতা চ্যাটার্জি, শ্রীমতি কল্যাণী দাস এবং ডাঃ ঋতা চক্রবর্তী।পরে থাকছে স্নিগ্ধা মিশ্রের সমাপ্তি কত্থক নৃত্য পরিবেশনা।
সম্মেলনে বিদুষী অপর্ণা চক্রবর্তীর সঙ্গীত পর্যালোচনা এবং অন্যান্য লেখা সমন্বিত একটি বই প্রকাশ এবং শ্রী মুকুল চন্দ্র চক্রবর্তীর স্মরণে অ্যাকচুয়ারিয়াল শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বার্ষিক পুরস্কারের ঘোষণা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। নীলোৎপল চক্রবর্তী শিল্পীপুত্র উদ্যোক্তা জানান; “আমাদের পরিবারের ক্ষেত্রে এটা সত্যিই একটি বিশেষ উপলক্ষ। যদিও আমরা বর্তমানে বিদেশে থাকি তবে আমরা ভারতীয় সংস্কৃতি বিশেষ করে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সাথে বেড়ে উঠেছি কারণ আমার মা এতে যুক্ত ছিলেন। এটি তাঁর জন্মশতবর্ষের বছর। তিনি একটি প্রচারবিমুখ প্রোফাইল বজায় রেখেছিলেন। যেহেতু এটি তাঁর জন্মশতবর্ষ, আমরা তাই সঙ্গীতের মাধ্যমে উদযাপন করার পরিকল্পনা করেছি।”