কেকা আইচ:অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো সিঁথি অনুরণন এর দুটি পর্বে দুদিনের নাট্য উৎসব ২০২১।
প্রথম পর্ব টি হলো মিনার্ভা থিয়েটার হলে। এই নাট্য উৎসব উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন নাট্যকার, নির্দেশক ও ঔপন্যাসিক কল্লোল চক্রবর্তী, সাউথ কলকাতা মুভমেন্ট আর্ট এর অভিনেতা ও পরিচালক পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়, কবি সুষ্মেলী দত্ত, আবৃত্তিকার সোমা ঘোষ ও অভিনেতা কিশোর দাস। সকল অতিথির হাতে পুষ্প স্তবক তুলে দেন দলের মেম্বাররা। সকল অতিথিদের হাতে স্মারক তুলে দিয়ে সংবর্ধনা জানান সিঁথি অনুরণন নাট্য দলের কর্ণধার ও অভিনেত্রী ডাঃ সঙ্ঘমিত্রা সাহা। সকলেই তাদের ভাষণে করোনার পরবর্তী সময়ে বর্তমান নাটকের অবস্হা ও সিঁথি অনুরণন এর তাদের নাটকের অবদানের কথা উল্লেখ করেন।
এইদিন পরিবেশিত হয় দুটি নাটক। প্রথম টি সাউথ কলকাতা মুভমেন্ট আর্টের নাটক “তবু বিহঙ্গ”। প্রয়োগ ও পরিকল্পনা এবং পরিচালনা
পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়। দ্বিতীয় নাটক টি ছিলো সিঁথি অনুরণন এর সাড়া জাগানো নাটক ” কাঁটাতারের বেড়া “।
নাটক শান্তনু মজুমদার। পরিমার্জন ও নির্দেশনা চন্দন মুখোপাধ্যায়। বাংলা ভাগের এক মর্মন্তুদ ঘটনা নিয়ে এই নাটকের পরিবেশনা। পূর্ব পাকিস্তান (অধুনা বাংলাদেশ)
রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতায় এক হিন্দু ও এক
আদর্শবাদী মুসলমান এর একাত্ম হওয়ার গল্প এ নাটক। এই নাটকে দারুন অভিনয় করেছেন (অন্নদাচরণ) ডাঃ সোমনাথ সাহা, (ধীরেন) বিভাস ভট্টাচার্য, (জামাল) চঞ্চল বন্দ্যোপাধ্যায়, (কমলা)
পাপিয়া রায়, (জীবন) তুষারকান্তি বাগচী, (রাধা) দীপিকা ঘোষ, (বাউলানী) ডাঃ সঙ্ঘমিত্রা সাহা। মূল রচনা শান্তনু মজুমদার। এই নাটকে গদাই এর মঞ্চ, মদনগোপাল সাহা র আলো, ইব্রাহিম এর সাজসজ্জা, আশিস ঘোষের শব্দ প্রক্ষেপণ নাটকটিকে এক উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গেছে।পরিমার্জনা ও নির্দেশনা য় চন্দন মুখার্জী যথাযথ।
সিঁথি অনুরণন এর দ্বিতীয় পর্যায়ের এক দিনের শেষ নাট্য উৎসব টি হলো দমদম মুক্তমন মুক্তমঞ্চে।সেদিন সংবর্ধনা দেওয়া হয় ১৮ নম্বর ওয়ার্ড এর প্রাক্তন পৌরপিতা সঞ্জয় দাস, মুদ্রা ডান্স একাডেমির প্রধান অরিন্দম গুহ, ইচ্ছে ডানা র কর্ণধার অর্পিতা বরাট কর্মকার, নাট্য নির্দেশক বোধিসত্ত্ব মজুমদার, মৃনাল দে, মঞ্চ সজ্জা র মান্তু দাস কে। সেদিন প্রথম মঞ্চস্থ হয় সিঁথি অনুরণন এর নাটক “আনন্দধারা বৃদ্ধাবাস”। নাটক ও নির্দেশনা চন্দন মুখার্জী। বৃদ্ধাবাস বা বৃদ্ধাশ্রম যে একটা আনন্দ-নিকেতন সেটাই এই নাটকের প্রধান বার্তা। সমাজের বিভিন্ন বৃত্ত থেকে আসা রকমারি মানুষের মিলন কেন্দ্র এই ” আনন্দধারা বৃদ্ধাবাস”। এখানকার আবাসিকদের ফেলে আসা জীবনের অকপট স্বীকারোক্তি, তাদের এবং বৃদ্ধাবাস এর সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত কিছু মানুষের শিল্পীবোধ ও সংস্কৃতি চেতনা সব মিলিয়ে এক দারুন এক ঘন্টার নাটক “আনন্দধারা বৃদ্ধাবাস”।এই নাটকে ইব্রাহিম ও গদাই এর সাজসজ্জা ও মঞ্চ সজ্জা বেশ ভালো। বাবু সামন্ত র আলো মোটামুটি।এই নাটকে চমৎকার অভিনয় করেছেন (ব্রতীন) ডাঃ সোমনাথ সাহা (সান্ধ্য) আশিস কুমার চন্দ্র, (কুমারেশ) তুষার কান্তি বাগচী, (টেঁপি) পাপিয়া রায়, (মিতা বউদি) ডাঃ সঙ্ঘমিত্রা সাহা, (প্রদীপ) বিভাস ভট্টাচার্য, (ডাক্তার) সুশান্ত চক্রবর্তী, (প্রিয়) জিতু নায়ার, (চঞ্চল) চঞ্চল বন্দ্যোপাধ্যায়, (রানু) ঈপ্সিতা ভট্টাচার্য, (শেলী) দীপিকা ঘোষ,(শান্তনীল) দেবাঞ্জন চ্যাটার্জী প্রমুখ শিল্পীরা।সকলের নজর কাড়ে এই নাটকটি।এই উৎসবের শেষ নাটক টি ছিলো দমদম রক্তকরবী র নাটক “নাট্যকারের সন্ধানে তিনটি চরিত্র”। নির্দেশনা বোধিসত্ত্ব মজুমদার।এক কথায় এই সন্ধ্যায় দুটি উপস্থাপনাই চমৎকার বলা যেতে পারে।সব মিলিয়ে সাড়ম্বরে উদযাপিত হলো দুটি পর্বে সিঁথি অনুরণন এর নাট্য উৎসব ২০২১।