আনন্দ সংবাদ লাইভ:দেখতে দেখতে পুজো এসে গেল ! সোনালী রোদ, সুনীল আকাশে ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘ, মাঠের কাশফুলের দুলুনি – বলে দিচ্ছে, মা দুগ্গা আসছেন। আকাশে-বাতাসে পুজো-পুজো গন্ধ আছে, তবে এবছরে কেমন যেন খুশির অভাব বুকের মধ্যে খোঁচা মারছে। দেশবিদেশ জুড়ে করোনা এমন কামড় মারছে – যে আনন্দটাই মাটি। তারপর চারিদিকে অঘটন – বিশ্বের নানাজায়গায় দাবানলের প্রলয়, হ্যারিকেনের উন্মাদনা, সুপ্ত আগ্নেয়গিরির জেগে ওঠা, সুনামীর ছোব, ভূমিকম্পের দাপাদাপি । ধর্মের উন্মাদনা দিকে দিকে মাথা তুলছে। অর্থনৈতিক, সামাজিক ভারসাম্য টলমল করছে, তাবড় তাবড় দেশ হিমশিম খাচ্ছে !
তবু এরই মাঝে – জীবন নিজের বেঁচে থাকার প্রেরণা খুঁজে নিচ্ছে নানা ভাবে। উৎসবের চিরাচরিত প্রথা বজায় রাখতে অনেকেই অনেক প্রতিকূলতা সহ্য করে, সোশ্যাল ডিস্টেন্সিঙ মেনে ক্রিয়াকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন ! ই-পুজো হচ্ছে অনেক জায়গায়, অনলাইন শপিং হচ্ছে, ওয়েব-কনফারেন্সে বা অনলাইন প্লাটফর্মে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে।
নতুন গান লেখা, সুরের সাধনাই বা পিছিয়ে থাকে কি ? পুজোর থিম গান বা পুজোসংখ্যার গানের প্রচলন এবারে একটু কম থাকলেও, অনেক শিল্পী অনলাইন প্লাটফর্মে নতুন গান রিলিজ করছেন। আর নতুন গান রিলিজ একটা অন্য মাত্রা পায়, যখন বিদেশ-বিভুঁইয়ে বসে বাংলা গান প্রকাশ করা হয় – যাকে বলে সোনায় সোহাগা !
এরকমই করতে চলছেন – কুশল চ্যাটার্জী। বাংলা থেকে দূরে থেকেও বাংলার শিল্পকে বুকে নিয়ে বেঁচে আছেন ! প্রতিষ্ঠিত ইঞ্জিনিয়ার হয়েও, পেশাদারীত্বে আগাগোড়া ভারতীয় বাঙালী শিল্পী ! গানরচনা এবং সংগীতচর্চা চলছে কয়েকটা বছর । আমেরিকায় বসে লিখছেন, সুর করছেন বাংলা গানের – গেয়েও চলেছেন। এবার পুজোয় রিলিজ করতে চলছেন একটি মিউসিক ভিডিও অনলাইন প্লাটফর্মে। মার্কিন মুলুকে বসে পুজোর গান – ভাবা যাচ্ছে কি ব্যাপারটা ?
গানটিতে কাজ করেছেন কিছু প্রবাসী ভারতীয় শিল্পী – তমাল দে মিউজিক পরিকল্পনা করেছেন , সুধীর অরভিন্দন মিক্স আর রেকর্ডিং করেছেন, অভিজিত ওয়ারখিরে কী-বোর্ডে সঙ্গত করেছেন । আবার ডেডিভ ডেসিলভা (বেস গিটার), লোলা ট্রিটন ( ভোকালিস্ট ), গাইটানো নিকোলাসি (ড্রামস )- যাঁদের ভারতীয় শিল্পকলার সাথে সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই, তাঁরাও হাতেহাত মিলিয়েছেন। সংগীতের সত্যি কোনো জাতপাত হয় না, গানের সুরে যেন ঐক্যবদ্ধ হয়েছে বিশ্বের নানা দেশের মানুষ।
ভিডিও ডাইরেকশন, শুটিং আর এডিটিং করার পুরো দায়িত্ব কিন্তু নিয়েছেন – অম্লান দত্ত, আরেক বাঙালী যিনি কর্মসূত্রে আমেরিকাবাসী এই মুহূর্তে ! এই করোনার আক্রমণের সময়েও খুঁজে খুঁজে কিছু উল্লেখযোগ্য জায়গা বার করেছেন আমেরিকার ইস্টকোস্ট আর ওয়েস্টকোস্টে। অক্লান্ত পরিশ্রমে একাধিক শুট আর লম্বা এডিটের পর শেষ করেছেন এই কাজটি। ভিডিওতে দেখা যাবে, ঋত্বিক এবং অনসূয়া, ভারতীয় এক মিষ্টি দম্পত্তিকে। ঝকঝকে এই ভিডিওতে ওদের দুজনকে দেখে কে বলবে – দুজনের এটাই প্রথম ভিডিও রিলিজ।
কয়েক মিনিটের আড্ডায় কুশল বললেন – “মিউজিক ভিডিওটা ৫ মিনিটের। কিন্তু এতে অনেক মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং আবেগ জড়িয়ে আছে। একেবারে শূন্য থেকে গানটার গড়ে ওঠা দেখেছি – নতুন গান তৈরী করার মজাই আলাদা ! অনেক গুণী মানুষের সাথে কাজ করার সুযোগ হলো – তাও আবার দেশ থেকে বহুদূরে।
এটা বারো প্রাপ্তি ! আর অম্লান নিজে দায়িত্ব নিয়ে যখন ভিডিওটা কমপ্লিট করলো, মনে হলো কাজটা সম্পূর্ণ রূপ পেলো ! পুরো সততার সাথে কাজটা করেছি আমরা, বাকিটা ভাগ্যের। ইউটিউবে পুজোর আগেই রিলিজ করবো আমরা, গানটি পাওয়া যাবে Amazon Music, iTune, Google Play, Saavn ইত্যাদি সবকটা ডিজিটাল মাধ্যমে। বিশ্বজুড়ে মানুষ শুনলে খুশি হবো !